সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / ঈদগাঁওতে ঘরে ঘরে নবান্নের ভাপাপিঠা উৎসব

ঈদগাঁওতে ঘরে ঘরে নবান্নের ভাপাপিঠা উৎসব


এম আবুহেনা সাগর; ঈদগাঁও :

কক্সবাজার জেলা সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওর প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্জলে চলতি মৌসুমে নতুন ধানের চাউলে শীতকালীন জনপ্রিয় ভাপাপিঠাসহ হরেক রকম পিঠা তৈরীর হিড়িক পড়েছে ঘরে ঘরে। সে সাথে দুধকলি, ক্ষীরসা, তালের পিঠা, ডিমপোয়া, খেজুর পিঠা, চুইপিঠা, পুলি, ছিটা পিঠা, পাটিসাপটা ইত্যাদি পিঠার কদর যেন বাড়ীঘর জুড়েই। পিঠা তৈরিতে প্রধানত চালের গুঁড়া, নানা ধরনের গুড়, নারিকেল, দুধ, মালাই, ক্ষীরসা, বাদাম, পেস্তা, কিশমিশ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।

সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে মানুষের জীবনধারায়। এখন ব্যস্ত জীবনে পিঠা বলতে আমরা শীত ঋতুকেই বুঝি। এই সময়ে হাটবাজার বা গ্রামীন রাস্তায় পিঠাওয়ালী দের চিতই পিঠা এবং ভাপা পিঠা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। শীতে সবার কাছে ভাপা পিঠার কদর একটু বেশিই বলা চলে। কারণ চিতই পিঠা নানা রকমের ভর্তার সঙ্গে মাখিয়ে খেতে সুস্বাদু লাগে। এসব ভর্তার মধ্যে রয়েছে শুঁটকি, ধনে পাতা, ডালভর্তা ইত্যাদি। এই পিঠাটি সবকিছুর সঙ্গে খাওয়া যায়। অনেকেই ভাপা পিঠার মধ্যে গুড় আর চিনি ও নারকেল দিয়ে তৈরী করে।

বর্তমানে নতুন ধানের চাউল পিষিয়ে ঘরবাড়ীতে বৌ ঝিয়েরা ভাপা পিঠাসহ হরেক রকমের পিঠাপুলি তৈরী করে নিপুন হাতে।

অন্যদিকে দুধে-খেজুরের গুড়ের সঙ্গে ভেজানো দুধ চিতই পিঠা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পিঠা বিক্রির জন্য দোকানিরা বিকাল সময়টাকেই বেছে নেন। তাই শীতের সময়ে বিকাল হলে বাড়ীতে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে। গরম গরম পিঠা ধোঁয়া ওঠা চুলা থেকে নামিয়েই ক্রেতার হাতে তুলে দেন দোকানি। ভাপাপিঠিটি দীর্ঘসময় ধরে জনপ্রিয়। শীতের আরেকটি প্রিয় পিঠার নাম পাটিসাপটা। মানুষের পছন্দের পিঠা এটি। বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে এই পিঠা দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। অনেক জায়গা তেই বিকাল হলেই পাটিসাপটা বানাতে দেখা যায়।একটা সময়ে পিঠা ছিল বাংলার ঐতিহ্য। সময়ের সঙ্গে সেই ঐতিহ্য অনেকটাই হারিয়ে গেছে। কিন্তু শীত এলেই পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে যায়। ফুটপাতে বসা দোকানগুলো স্মরণ করিয়ে দেয় পুরনো সে ঐতিহ্যের কথা। বাংলা পঞ্জিকা মতে বাংলার চিরায়িত নবান্ন উৎসব শুরু হয়েছে। এ উৎসবকে ঘিরে ঈদগাঁওর প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব।

গৃহিনীরা ব্যাস্ত ঘর-গৃহস্থালির কাজ নিয়ে, আর কৃষকরা ব্যাস্ত মাঠে। নতুন ধানকে বরন করতে ঘরে ঘরে চলছে উঠোন লেপন, আলপনা আকাঁ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা। বাড়ি বাড়ি নানা পিঠা তৈরি করার ধুম পড়েছে। নতুন ধানের মৌ মৌ সুগন্ধে বাড়ির আঙিনা ভরে উঠেছে। গ্রামের মেয়েরা ঢেঁকিতে নতুন ধানের চাল গুড়া করতে, মুড়ি ভাজতে এবং ভোরে উঠে শীতের ভাপা পিঠা তৈরি করার সকল প্রস্তুতি চলছে। পিঠা খাওয়ার জন্য চলছে খেজুরের পাটারী গুড় সংগ্রহ। বাড়িতে বাড়িতে জামাই-ঝি নাইওরে আনা হয়েছে।

সাবরিনা জানান, প্রতি বছর শীত মৌসুমে ভাপাপিঠা খাওয়ার ধুম পরে যায়। শীতের সময় ভাপাপিঠা খেঁজুরের পাটারী গুড় দিয়ে খেতে খুব মজা। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠেই চাল গুড়া করতে বসেছি। ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার আগেই ভাপাপিঠে তৈরি করা হবে এবং নামাজ পড়ার পর বাড়ির ছোট বড় সবাই কে নিয়ে এক সঙ্গে পিঠে খাওয়া হবে।

সানজিদা, জামি ও জেরি মনিরা জানিয়েছেন, মায়ের নিপুণ হাতে তৈরী করা ভাপা পিঠা খেতে পেরে খুব আনন্দিত।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

দৈনিক যুগান্তরের কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিম উদ্দিনের পিতার মৃত্যু : বিভিন্ন মহলের শোক

  নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : দৈনিক যুগান্তরের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি জসিম উদ্দিনের পিতা হাজী নূর ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/