এম.আবুহেনা সাগর; ঈদগাঁও :
ঘূর্ণিঝড় মোরা’র প্রভাবে সদরের পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীতে কাঁচা ঘরবাড়ি-দোকানপাট- ক্ষেত খামারসহ গাছগাছালির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃহত্তর এলাকার প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে কাঁচা ও টিনের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যাওয়ায় অনেকে বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন যাপন করছে। গোমাতলীর উপকূলীয় বেড়িবাধ অসম্পন্ন থাকার ফলে জোয়ার ভাটায় বন্দি হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্তরা ফের দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৩০ মে রাত আনুমানিক তিনটার দিকে শুরু হওয়া ঝড়ো হাওয়া আর প্রচন্ড বৃষ্টিপাতে আঘাত হানে গোমাতলীতে। যা পরদিন সকাল দশটা পর্যন্ত স্থায়িত্ব ছিল।এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোরা’র প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ গাছপালা।
উপকূলীয় এলাকা পোকখালীর গোমাতলী বেড়িবাধ ভাঙ্গনের কারণে পাশ্ববর্তী এলাকা জুড়ে জোয়ার ভাটায় প্লাবিত হয়ে পড়ে গ্রামবাসী।পোকখালীর মোজাহের আহমদ জানান, গোমাতলীতে বেড়িবাধ সংস্কার না করলে এলাকাবাসীকে বর্ষা মৌসুমে মরণ দশায় ভোগতে হবে।
পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যানের মতে, তার ইউনিয়নের ৭, ৮ এবং ৯ ওয়ার্ড গত ২ দিন ধরে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়াতে উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম গোমাতলীসহ বিশালকার এলাকা ৩/৪ ফুট ধরে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ইউনিয়নের পশ্চিম গোমাতলীর হামিজ্জিঘোনা, দক্ষিন ঘোনা, সোজার ঘোনা, বিরাশি ঘোনা, বোরাকঘোনা, কাটাঘোনা, মেজর ঘোনা, আবদুল্লাহখানের ঘোনা, এ ব্লক, ডি ব্লক, ও সি ব্লক ঘোনা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেঙ্গে গেছে বাড়ি ঘর, গাছপালা। পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে ২-৩ হাজার মানুষ।
গোমাতলীর সাবেক এক যুবনেতা জানান, টেন্ডার হওয়ার পরও রোয়ানুর আঘাতে ক্ষত বিক্ষত বেড়ীবাঁধটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে এলাকাবাসী। প্রতিনিয়ত জোয়ার ভাটায় হাবুডুবু খেলেও ঘূর্ণিঝড় মোরা থেকে বাচতে উপকূলীয় গোমাতলীর লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেলেও আতংক কেটে যাওয়ার পরপরই লোকজন ফের বাড়িমুখী হয়ে পুনরায় সংস্কার করে দাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে গোমাতলীর কয়েকটি গ্রাম প্রতিনিয়ত জোয়ার ভাটায় বন্দি থাকা লোকজন বর্ষা মৌসুমে চরম আতংকে রয়েছে বলে জানান অনেকে।
অপরদিকে সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁও’র ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষের কাছে এখনও কোন প্রকার ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব এলাকার দূর্গত লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছেন। অদ্যাবধি ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য সরকারের কোন কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও দূর্গত অঞ্চলে দেখা যায়নি।
গোমাতলী গ্রামের ২/১ বাসিন্দার মতে, ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে তাদের ঘরবাড়ী সম্পূর্ণরুপে বিধ্বস্ত হয়েছে। চৌফলদন্ডীর কয়েক বাসিন্দা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরা আঘাত হানার পর থেকে সরকারী অথবা বেসরকারী কোন সংগঠণ অদ্যবধি তাদের কোন খোঁজ খবর নেয়নি।
জালালাবাদের ইউপি চেয়ারম্যানের মতে, তার ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরীর কাজ চলছে পুরোদমে। শ্রীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের কাজ শুরু করা হবে।
ভারুয়াখালীর এক প্যানেল চেয়ারম্যানের মতে, তার ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়ার পশ্চিমাংশ, ছৈয়দা পাড়া, ননা মিয়া পাড়া, সাবেক পাড়া উত্তরাংশ, চাইঙ্গা মোরা, চৌচুলা মোরার উত্তরাংশসহ বিস্তীর্ণ জনপদ ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে ঈদগাঁও’র ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকার মানুষের কাছে শীঘ্রই ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন দূর্গত এলাকার লোকজন।
You must be logged in to post a comment.