কক্সবাজারের চকরিয়ার জমজম প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয়ার ৫৯ ঘন্টা পর মারা গেছে এক নবজাতক। জন্ডিস আক্রান্ত ওই নবজাতকের মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে মায়ের অজ্ঞতার কারণেও শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলে চিকিৎসকের আশংকা। ফলে পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করে মারা যাওয়া শিশুর চিকিৎসাপত্র জব্দ করেছে যাচাই করতে।
সোমবার ভোর ৫টায় ওই শিশু মারা যায়। অভিযোগ উঠে বিকালে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার বাঘগুজারাস্থ নন্দীরপাড়া গ্রামের আজম উদ্দিন তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী রোজিনা (২৪)কে ২০ নভেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে চকরিয়ার জমজম হাসপাতালে ভর্তি করান। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায় সিজার করে জন্ম হয় এক কন্যা সন্তানের। জন্মের পরই নবজাতক আক্রান্ত হয় জন্ডিসে।
আজম উদ্দিন স্ত্রীকে জমজম হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা অব্যাহত রাখলেও নবজাতক সন্তানকে হাসপাতাল সড়কস্থ প্রাইভেট চিকিৎসক ডা: মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিনের কাছে চিকিৎসা করান। ডা: আব্বাস নবজাতক শিশুকে জন্ডিস রোগের ওষুধ খাওয়াতে চিকিৎসাপত্র প্রদান করেন। সে মতে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছিল ওই শিশুকে। কিন্তু সোমবার ভোর ৫টার দিকে ৫৯ঘন্টা বয়সি শিশু মায়ের সান্নিধ্যে থেকে মারা যায়।
নবজাতক মারা যাওয়ার পর বিকালে অভিযোগ উঠে হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় ওই শিশু মারা গেছে। এই অভিযোগের প্রক্ষিতে হাসপাতালে ছুটে যান চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর। তার সাথে একদল পুলিশ ছাড়াও চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মোহাম্মদ ছাবের ছিলেন। পুলিশ মারা যাওয়া শিশুর চিকিৎসাপত্র জব্দ করেছে যাচাই করতে।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা: মোহাম্মদ ছাবের বলেন, চিকিৎসাপত্র দেখে মনে হচ্ছে নবজাতক জন্ডিসে আক্রান্ত ছিল। ওষুধ খাওয়ানোর ফাঁকে হয়তো অজ্ঞতার কারণে মা রোজিনা শোয়ানো অবস্থায় শিশুকে দুধ খাইয়েছে। এতে মাথায় দুধ ওঠে যাওয়ায় মারা যেতে পারে শিশু।
জমজম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবী, আমাদের হাসপাতালে ওই শিশু জন্ম নিলেও চিকিৎসা করায়নি। কাগজপত্র যাচাই করলে তার প্রমাণ মিলবে। এছাড়াও মারা যাওয়া শিশুকে ময়নাতদন্ত করালে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আমরা দায়ী হলে যেকোন শাস্তি মাথা পেতে নেবো। তারা আরো বলেন, নবজাতক মারা যাওয়ার পর হাসপাতালে নামমাত্র টাকা দিয়ে মৃত শিশুকে নিয়ে যেতে চায়। ব্যয় হওয়া টাকাও না দেয়ায় শিশুকে হস্তান্তর করা হয়নি। এরই প্রেক্ষিতে উদ্দেশ্য প্রনোদিত অভিযোগ তুলেছে।
মারা যাওয়া শিশুর মা-বাবার বক্তব্য জানতে চাইলে তারা কোন কথাই বলেননি।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, চিকিৎসা অবহেলার কারণে শিশু মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ উঠায় জমজম হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পত্র জব্দ করেছি। যাচাই-বাছাই পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
You must be logged in to post a comment.