বান্দরবানের লামার ছৌলুম ঝিরি কয়লা খনি হতে পারে জাতীয় অর্থনীতিতে বিশাল সম্ভাবনার অন্যতম ক্ষেত্র। লামা উপজেলার ৬নং রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ছৌলুম ঝিরিতে প্রায় ১১হাজার একর পাহাড়ি জায়গার উপর রয়েছে কয়লার খনিটি। রুপসীপাড়া বাজার থেকে প্রায় ৫ কি:মি: পূর্বে কয়লার খনিটি অবস্থিত।
জানা গেছে, ১৯৮১-৮২ সালে অত্র অঞ্চলের মানুষ কাঠ, বাঁশ, লাকড়ি আহরণে গিয়ে প্রথমে চোখে পড়ে কয়লার খনিটি। পাহাড়ি এলাকায় নদী, ছড়া, ঝিড়ি ও খাল হচ্ছে মানব চলাচলের অন্যতম মাধ্যম। নদী পথ দিয়ে ছৌলুম ঝিরিতে গেলাই দেখা যাবে ঝিরির দু’পাড়ে ভাসমান কয়লা, পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে। প্রায় দুই মাইল এলাকা জুড়ে কয়লার অস্তিত্ত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। রুপসীপাড়ার স্থানীয় অনেকে উক্ত কয়লা নিয়ে এসে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে।
রুপসীপাড়া বাজারের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব মোঃ দেলোয়ার হোসেন (৬০) বলেন, উক্ত কয়লার খনির পাশে আমার জায়গা রয়েছে। ১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকারের শাসন আমলে জ্বালানী ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা খনিটি পরিদর্শন করে যায়। তৎকালীন তাদের কাছ থেকে জানা যায় উক্ত খনির কয়লার মান অত্যান্ত ভাল ও জাতীয় মানের। শুধুমাত্র অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে শেষ পর্যন্ত আলোর মূখ দেখেনি কয়লার খনিটি।
বর্তমানে রুপসীপাড়া পর্যন্ত পিচঢালা রাস্তা হয়ে গেছে এবং মংপ্রু পাড়া পর্যন্ত রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। মংপ্রু পাড়া থেকে খনির দূরত্ব ১ কি:মি:। উক্ত কয়লার খনিতে সরকারের উদ্যোগে কয়লা আহরণ করলে একদিকে বিশাল অংকের অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা হবে এবং পিছিয়ে পড়া পাহাড়ি এলাকার বেকার শত শত মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
ছৌলুম ঝিরি এলাকার মোঃ শফিকুল আলম (৬৫) জানান, ২০১৩ সালের জুলাই মাসের দিকে তেল গ্যাস অনুসন্ধান সংস্থা বাপেক্স কর্মকর্তারা খনিটি পরিদর্শন করেন। বাপেক্স কর্মকর্তারা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেন এলাকাবাসীকে। সংরক্ষিত কয়লার খনিটি সরকারী উদ্যোগে অধিগ্রহণ করে কয়লা আহরণের কাজ শুরু করতে তিনি অনুরোধ করেন। তাছাড়া ভাসমান কয়লা হওয়ায় অন্যান্য খনি থেকে উক্ত খনিতে কয়লা আহরণের খরচ কম হবে বলে জানান।
রুপসীপাড়া ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার নাংক্রাত মুরুং বলেন, খনিটি এখনো সুরক্ষিত আছে।
তাছাড়া উক্ত জায়গাটি খাস। মৌজা হেডম্যান ও কারবারীদের নিয়ে আমরা খনিটিকে রক্ষনাবেক্ষণ করে যাচ্ছি।
লামা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ জাহিদ আকতার বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। আমি খনির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরে আনার চেষ্টা করব। আমি মনে করি পাশ্ববর্তী মহেশখালী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অন্যতম উৎস হতে পারে এই কয়লার খনিটি।
You must be logged in to post a comment.