হুমায়ুন কবরি জুশান, উখয়িা :
গত এক সপ্তাহের অবিরাম বর্ষণে কক্সবাজারের উখিয়ার অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। গত ২ দিন বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাওয়ায় আটকে থাকা পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। উখিয়ার অনেক কাঁচা ঘর-বাড়ি ঢলের পানিতে ভিজে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আনজুমানপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম আশ্রয় কেন্দ্র ভবনসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া গ্রামের শাক-সবজি, পানের বরজ ও অন্যান্য ক্ষেতের মৌসূমী ফসল অতি বৃষ্টিতে মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
রবিবার উখিয়ার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের বেশি টানা অতি বর্ষণে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের নাফ নদী সংলগ্ন আনজুমানপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রটি ধসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। অধিক বষর্ণে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব পার্শ্বস্থ গাইডওয়াল ধসে পড়ায় পাহাড়ি টিলার উপর স্থাপিত উক্ত বিদ্যালয় ভবনটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। গাইডওয়াল ভেঙ্গে যাওয়ায় টিলার অনেকাংশ মাটি ধসে পড়েছে। উক্ত বিদ্যালয় ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মেম্বার, সদস্য রিদুয়ানুল হাকিম ও অফিস সহায়ক লুত্ফুর রহমান সহ স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ইতোমধ্যে বিদ্যালয় ভবন রক্ষা দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ায় মাটি সরে পড়ছে। বিদ্যালয় ভবনের ভিতরে অনেক স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। সভাপতি হেলাল উদ্দিন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে সরকারী ছুটি থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের আনা গোনা নেই। এ অবস্থায় রমজানের পর স্কুল খুললে চলমান বর্ষার মধ্যে কচিকচি শিশুরা ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসে কিনা সন্দেহ রয়েছে।
উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন অতি বর্ষণের কারণে গাইডওয়াল ভেঙ্গে মাটি সরে যাওয়া, স্কুল ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল সৃষ্টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রায় ৬ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। ১৯৯৪ সালে নির্মিত ৩ তলা বিশিষ্ট আশ্রয় কেন্দ্র কাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি যথাযথ ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার না হওয়ায় ঝুঁকির কবলে রয়েছে। স্থানীয় দোকানদার হাবিবুর রহমান বলেন, যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে কোন সময় উক্ত সুউচ্চ ভবনটি ধসে পড়ে স্থানীয় লোকজনের ঘর বাড়ি, দোকানপাট প্রভৃতির পাশাপাশি অনেক মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশংকা রয়েছে। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অবিলম্বে স্থানীয় ছাত্র-ছাত্রী ও গ্রামবাসীদের জানমাল রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান সরকারী স্কুল ভবনটি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন। গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ, পাহাড়ি ঢলের পানিতে এখানকার গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গ্রামীণ রাস্তা ঘাটের অনেকাংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ক্ষেত খামারের পাশাপাশি মৌসূমে শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এসব স্বল্প পুঁজির গ্রামীণ কৃষকরা তাদের ক্ষেতের ফসল অপরিণত সময়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন ভাবে বুনতে আর্থিক টানাপোড়ন চলছে বলে জানা গেছে।
You must be logged in to post a comment.