দুর্নীতি করে পার পাবেন না বলে নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে সতর্ক করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তিনি বলেছেন, দুর্নীতি থেকে বাঁচতে আপনি রাতদিন ঢাকায় দৌড়ঝাঁপ করছেন। রথি-মহারথিদের দরোজায় দরোজায় ঘুরছেন। কিন্তু এবার আপনি পার পাবেন না। কারণ শেখ হাসিনার সরকারের আমলে কোন দুর্নীতি বা দুর্নীতিবাজকে প্রশয় দেওয়া হয় না, হবেও না।
রোববার বিকেলে শহরের ঐতিহাসিক ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় “সিটি করপোরেশনের দুর্নীতি বিরোধী” নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যিনি ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইভীর নির্বাচন করেছিলেন। দুপুরের পর থেকেই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকা থেকে সিটি মেয়র আইভীর দুর্নীতির সচিত্র ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে থাকে শামিমের লোকজন। তারা আইভীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে রাজপথ মুখর করে তোলে।
কাউন্সিলররা উপস্থিত থেকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের কাছে দুর্নীতির বিষয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, মেয়র আইভীর দুর্নীতির বিচার দাবি করেন। প্রয়াত বড় ভাই ও এমপি নাসিম ওসমানকে স্মরণ করে শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের গ্যাসের সমস্যা সমাধানে নাসিম ওসমান কাজ করেছেন। আর তখনই আইভীর আঁতে ঘা লেগে যায়। অনুগামী একজন কাউন্সিলরকে দিয়ে গোদনাইলে মামলা ঠুকে দেন। বন্ধ হয়ে যায় গোদনাইল থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত গ্যাসের পাইপ সংযোগ স্থাপনের কাজ। পরে আমার অপর ভাই সেলিম ওসমান যখন নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর এমপি হয়েছেন, তিনি ওই কাউন্সিলরকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। পরে মামলা তুলে নেওয়ার পর গ্যাসের কাজ সম্পন্ন হয়। এখন নারায়ণগঞ্জে আর গ্যাসের সমস্যা নাই। মানুষের দুর্ভোগ কমে গেছে। অথচ সেই গ্যাস নিয়ে আইভী নোংরা রাজনীতি করেছে। শীতলক্ষ্যা সেতু প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করেছিলেন নাসিম ওসমান। বিদেশি ফান্ডও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বাধা দিয়েছেন আইভী।
এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। আশা করছি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবে। সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শামীম ওসমান কত বড় আত্মত্যাগ করেছেন তা একমাত্র আমিই জানি। কেননা আমি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আইভীর পক্ষে নির্বাচন করেছি। পরিশেষে সেই আইভী আমাকে দিয়েছে প্রহসন, যন্ত্রণা আর তিরষ্কার। মেয়র আইভীর দুর্নীতির বিচার চেয়ে তিনি বলেন, আমি নিজেও দুর্নীতি করি না, অন্যকেও করতে দিব না। সমাবেশে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ইসরাত জাহান স্মৃতি, কামরুল হাছান মুন্না, আলমগীর হোসেন, আলাউদ্দিন আলাল, দুলাল প্রধান, আনোয়ার হেসেন আনু, জান্নাতুল ফৌরদোস নীলা, রেহানা আক্তার ও হাছান প্রধানসহ ২৬ জন কাউন্সিলর জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে বক্তব্যে বলেন, আমরা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হয়েও নির্যাতিত। তেমন কোন কাজ করতে পারি নাই। সিটি করপোরেশনের মেয়রের দুর্নীতি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এ দুর্নীতির সঙ্গে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তাহলে আরো বড় বড় দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট মঞ্জরুল হক, বিকেএমইএর সহ-সভাপতি জি এম ফারুক, ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি লিটন সাহা প্রমুখ।
-গ্লোবটুডেবিডিডটকম,ডেস্ক।
You must log in to post a comment.