সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / আধিপত্যের লড়াইয়ের যুদ্ধে অশান্ত কক্সবাজার ফের সন্ত্রাসী গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধ দুইদিনে নিহত ৩

আধিপত্যের লড়াইয়ের যুদ্ধে অশান্ত কক্সবাজার ফের সন্ত্রাসী গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধ দুইদিনে নিহত ৩

Khon - Ajit Himu 18-10-2015 (News) f3অজিত কুমার দাশ হিমু, কক্সভিউ:

কক্সবাজার শহর এখন সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে। গত দুইদিনে এখানে পথচারীসহ নিহত হয়েছে ৩জন। আহত হয়েছেন সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যসহ বহু মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ অক্টোবর রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের নতুন জেলখানার পেছনে বাদশা ঘোনা নামক এলাকায় বিবদমান দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধে শীর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত নুরুল আলম ও বর্মাইয়া কালু নিহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩টি বন্দুকসহ বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করেছে।

জানা গেছে, রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে কক্সবাজার শহরের নতুন জেলখানার পেছনে বাদশা ঘোনা নামক এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার বিবদমান দুটি সন্ত্রাসী বাহিনী রমজান বাহিনী ও নুরুল আলম বাহিনীর মধ্যে প্রকাশ্যে গোলাগুলিতে লিপ্ত হয়। এতে ডাকাত ও শীর্ষ সন্ত্রাসী নুরুল আলম বাহিনীর প্রধান নুরুল আলম ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বর্মাইয়া কালু গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, দু’সন্ত্রাসী বাহিনী মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় পুুলিশ। ঘটনাস্থলে নুরুল আলম ও তার সহযোগী সন্ত্রাসী বার্মাইয়া কালুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরো জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৩টি এলজি ও ৫ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। নিহত নূরুল আলমের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা রয়েছে।

এদিকে কক্সবাজার শহরে সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে আধিপত্যের লড়াই মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে মারাত্মকভাবে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২ দিন না পেরোতে নিহত হয়েছে আরও ২জন। দুইদিনের ব্যবাধানে নিহত হয়েছেন পথচারীসহ মোট ৩জন। এর ফলে পর্যটন শহরের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। সেই কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শহরেবাসী।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কক্সবাজারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দীর্ঘদিন স্বাভাবিক থাকলেও সম্প্রতি হঠাৎ করে মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে শহরের আলোচিত সন্ত্রাসীরা। মূলত আধিপত্য বিস্তার ও ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্রে করে প্রতিনিয়ত তাদের মধ্যে ঘটছে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ। এতে নিহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ সহ সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা।

সূত্র মতে, কক্সবাজার শহরের পাহাড়ী এলাকা পাহাড়তলী, দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া, ঘোনার পাড়া, বৈদ্যঘোনা, বাদশা ঘোনা, জেলগেইট, বাসটামির্নাল লারপাড়া, ফাতেহার ঘোনা, খাজা মঞ্জিল, ইসলামপুর, বাচামিয়ার ঘোনা, আবু উকিলের ঘোনা, ইসলু ঘোনা, সমিতিবাজার, সাহিত্যিকা পল্লী, আমতলী, সবুজ সওদাগরের ঘোনা, গয়ামতলী, লাইটহাউজ পাড়া, রহমতপুর ও জেলা কারাগারসহ শহরের অর্ধেক এলাকায় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসীরা রাজত্ব চালাচ্ছে। এসব এলাকায় ১৫টি বেশি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। এর মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে রুমালিয়ারছড়ার রকি বাহিনী, সিফাত বাহিনী, হাসনাত বাহিনী, নুরু বাহিনী, বশর বাহিনী, সৌরভ বাহিনী, সালাহ উদ্দীন বাহিনী, রফিক বাহিনী, ডাকাত নুর আলম বাহিনী (নিহত), রমজান বাহিনী। এদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দু’শতাধিক সন্ত্রাসী। এরা সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত অপরাধী। এদের মধ্যে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীও রয়েছে উলে­খযোগ্য সংখ্যক। এসব সন্ত্রাসী হাতে দিনের পর দিন জিম্মি জীবন কাটাচ্ছে ওইসব এলাকার লোকজন।

স্থানীয়রা জানান, প্রথম দিকে এক বাহিনী হয়ে গড়ে উঠলেও পরবর্তীতে ক্ষমতা ও লুট করা সম্পদের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সৃষ্টি হয় অন্তকোন্দল। এই অন্তকোন্দলই আরেকটি বাহিনী গড়তে ভূমিকা রাখে। এর পরের চিত্র হয়ে উঠে আরো ভয়াবহ। কেননা তখন শুরু হয় আধিপত্যের লড়াই। রাজত্ব ভাগাভাগিতে এক সময়ে সতীর্থরা হয়ে উঠে গুলির টার্গেট! এমন টার্গেটে নিজের গড়া শিষ্য সিফাত বাহিনীর নির্মম ভাবে খুন হয়েছেন ঘোনারপাড়া জাকির মোস্তফা। একইভাবে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন দক্ষিণ রুমালিয়ার ছড়ার আরজুসহ একাধিক সন্ত্রাসী। সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর খুন হয়েছে সমিতিবাজারের শেখ আব্দুল্লাহ। এক সময়ের সতীর্থ রকি বাহিনীর হাতেই নির্মমভাবে খুন হয় সে। ১৮ অক্টোবর খুন হয়েছে জেলগেইটের বশর বাহিনীর বশরের ডান ও বাম হাত খ্যাত নূরুল আলম ও বার্মাইয়া কালু। প্রতিপক্ষ রমজান বাহিনীর হাতে তারা খুনের শিকার হয়েছেন। রমজান বাহিনীর রমজানও এক সময় বশর বাহিনীর সাথে কাজ করতেন।

এব্যাপারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফাইল আহমদ জানিয়েছেন, শহরে গুঁটি-কয়েজন দুর্বৃত্ত বেপরোয়া হয়ে চুরি-ছিনতাই করে বেড়াচ্ছে। তাদের আটক করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশাকরি সন্ত্রাসীরা দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়বে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/