বৃষ্টিতে চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশছোঁয়া। এতে করে বৃহত্তর এলাকার গ্রামাঞ্জলের ক্রেতাগণ চরমভাবে বিপাকে পড়তে দেখা যায়। কাঁচা বাজারে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। এমনকি ৫০ টাকার নিচে কোন সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০/২০ টাকা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যাপ্ত সবজি বাজারে আসছে না আর এ কারণেই দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। অধিকাংশ সবজিই বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকা দরে। বিশেষ করে কাঁচা বাজারে প্রভাব পড়ছে বেশি। অতি বৃষ্টির কারণে পরিবহণ ব্যয় কিছুটা বেড়েছে। আর এ অজুহাতকে কাজে লাগিয়ে কারণ ছাড়াই বিক্রেতারা বাড়াচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম।
গত কয়েকদিনে লাগামহীনভাবে বেড়েছে সকল ধরনের সবজির দামও। তবে কোনো কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ডিমের দাম। তবে ব্যবসায়ীদের মতে, বাজারে আমদানি কম, পরিবহণ খরচ বেশি। এই অবস্থা থাকলে আগামীতে নিত্যপণ্যের দাম আরো বাড়তে পারে। তবে একাধিক সাধারণ ক্রেতার মতে, আসন্ন ঈদুল আযহা তথা কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এখন থেকে দ্রব্যমূল্যের দাম ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাড়িয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও জানান।
আরও অভিযোগ যে, মিথ্যা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। গতকাল বাজারবার ঈদগাঁও’র কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৪০ টাকা এবং বরবটি ৬০ টাকা ও টমেটো ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর বয়লার মুরগীর ডিম বিক্রি হচ্ছে হালি প্রতি ৩৬-৪০ টাকা।
কাঁচাবাজারে দামের বিষয়ে বৈরী আবহাওয়াকেই দুষছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের মতে, বৃষ্টির কারণে কাঁচাপণ্যের সরবরাহ কমে গেছে। ফলে বেশি দাম দিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পণ্য কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি আরো কয়েকদিন চলতে থাকলে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তাদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দুই তিন গুণ দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে আমাদের। পেঁয়াজের দামের বিষয়ে এক আড়তদারের মতে, আসলে একটা পেঁয়াজ যদি বৃষ্টির পানিতে পঁচে যায় তবে বাকি পেঁয়াজ রাখা খুব অসুবিধা হয়ে পড়ে। এ কারণে বাজারে এর কিছুটা প্রভাব পড়ছে। এর সঙ্গে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিকেও কারণ হিসেবে দাবি করেছেন তিনি।
ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীর মতে, বৃষ্টি ও ঠান্ডাজনিত কারণে অনেক দেশি মুরগি মারাও যাচ্ছে, ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। তারা আরো বলেন, বাজারে মাছ, মাংস, ডাল ও শাকসবজির দাম বাড়ার কারণে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। আর এ কারণে বাজারে ডিমের সংকট হয়েছে। এভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সহ অপরাপর জিনিসপত্রের দাম যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে গ্রামাঞ্জলের গ্রাহকদের মরণ দশা ছাড়া আর কিছু নয়। ঠিকমত বাজার মনিটরিং এর জোর তাগিদ দিয়েছেন গ্রামাঞ্চলের সচেতন ক্রেতাগণ।
অন্যথায় একের পর এক দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে বিপাকে পড়বে বৃহত্তর এলাকার লোকজন।
You must log in to post a comment.