কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের অনিবন্ধিত নতুন টালের প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণের নেপথ্যে রয়েছে মানব পাচারকারী, চোর, ডাকাত, সন্ত্রাসী, নারী ও শিশু পাচারকারী চক্রের সদস্য মাঝিও ব্লক চেয়ারম্যান নামধারি ৪৩জন অপরাধী। এসবের সাথে স্থানীয় গুটি কয়েক প্রভাবশালী মহলের যোগসাজস রয়েছে বলে জানা গেছে। ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারিও খামখেয়ালীপনার অভাবে অনিবন্ধিত পুরো নতুন টালের শেড, ব্লকসহ প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে জিম্মি করে রেখেছে কতিপয় সন্ত্রাসীরা।
সম্প্রতি হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বাসিন্দা নয়া বাজার এলাকার চিহ্নিত পেশাদার ডাকাত,ছিনতাইকারী দলের প্রধান ও সন্ত্রাসী ইলিয়াছকে কুতুপালং রোহিঙ্গাদের নতুন টালের ই-টু ব্লকের চেয়ারম্যান বানানো হয়। যদিও অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কোন নীতিমালা বা পরিপত্র নেই। এখানকার বসবাসরত রোহিঙ্গারা গণভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। তাছাড়া শেড মাঝি বা ব্লক চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে একাধিক প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। অবশ্যই এ ক্ষেত্রে একটা মোটা অংকের টাকার লেনদেন ও হয়ে থাকে। ক্যাম্প চেয়ারম্যান নামধারি বহু মামলার পলাতক আসামি ডাকাত আবু ছিদ্দিক, মোহাম্মদ নুর, রফিক, জিয়া, নুর আলম, মাজেদ, রুহুল আমিন, ডাইলু, হোছন, নুর কামালসহ ৪৩ জনের একটি সিন্ডিকেট রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ করে আসছে বলে সাবেক মাঝি লালু জানান।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা আন্দোলনের হোতা ডা: আব্দুল্লাহকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ডি-ওয়ান ব্লকের চেয়ারম্যান, একই ব্লকে হ্নীলার বাসিন্দা ডাকাত জাফর আলমকে মাঝি বানানো হয়। এছাড়াও কুতুপালং শিবিরের চিহ্নিত মানবপাচারকারী মোহাম্মদকে ই-টু ব্লকের মাঝি হিসাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছে কথিত আবু ছিদ্দিক, মোহাম্মদ নুর, রফিক ও জিয়া।
মোহাম্মদ জানান, এক সাথে ৪টি ব্লক ও শেডের দায়িত্ব নিতে গিয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকা গুণতে হয় ৪ জনকে।
ডি-ওয়ানের বাসিন্দা নুরুল আলম নামের এক মালেশিয়া প্রবাসির স্ত্রী জানান, অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তাদের হাতে প্রতিনিয়ত অত্যাচার, নির্যাতন, চাঁদাদাবিসহ বিচার শালিসের নামে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ আদায় করে থাকে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-টু ব্লকের সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ জানান, রোহিঙ্গা শিবিরের কিছু চাটুকারের কারণে ক্যাম্পের ব্লক ও শেড মাঝি অপসারণ করতে হয়। এসব কিছু অর্থের বিনিময়ে হয়ে থাকে।
ক্যাম্প ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী বলেন, অনিবন্ধিত নতুন টালের ব্যাপারে আমার জানা নেই। তবে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইলে কথা না বলে তিনি সরাসরি অফিসে এসে তথ্য নিতে বলেন।
You must be logged in to post a comment.