এমপি বদির ন্যায় বিচার ও মুক্তি কামনায় গণসমাবেশ ও দোয়া মাহফিল

গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ : 

দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় ২ নভেম্বর তথ্য গোপন করার দায়ে উখিয়া-টেকনাফের গণমানুষের প্রিয় নেতা, গরীবের বন্ধু এমপি আবদুর রহমান বদিকে সাজা দেওয়া ও কারাগারে প্রেরন করার প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরে উখিয়া-টেকনাফের সাধারণ জনগণ রাজপথে নেমে আসে গড়ে তুলে শান্তিপুর্ণ আন্দোলন। বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মানুষের আগমনে শুরু হয় মানববন্ধন, পথসভা, ন্যায় বিচার পাওয়ার দাবিতে প্রতিবাদ ও এমপি বদির মুক্তির কামনায় অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল।

এইভাবে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে রাস্তায় নেমে আসে উখিয়া-টেকনাফের নারী-পুরুষ, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সাধারন মানুষের মুখে মুখে একটি শব্দ এমপি বদির মুক্তি চাই, এমপি বদির মুক্তি চাই। সেই ধারাবাহিকতায় এমপি বদির মুক্তির দাবিতে টেকনাফ বাসষ্টেশন, উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সামনে বিশাল গণসমাবেশ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্টিত হয়েছে। গতকাল ৮ নভেম্বর দুপুর ২ টায় টেকনাফ উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতায় উক্ত সভা অনুষ্টিত হয়। দুপুর ২ টা সর্ব প্রথম টেকনাফ উপজেলা ওলামা পরিষদের উদ্দ্যোগে হাজার হাজার আলেম সমাজের বিশাল এক মিছিল টেকনাফ পৌরসভার প্রধান সড়ক গুলো প্রদক্ষিণ করে। তাদের মুখে মুখে একটি উচ্চারণ প্রিয় নেতা গরীবের বন্ধু এমপি বদির মুক্তি চাই। এর পরপর টেকনাফ পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে স্থানীয় কাউন্সিলারদের নেতৃত্বে শত শত মানুষের আগমনে ও মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠে টেকনাফ পৌর শহর ও সভাস্থল। তার পাশাপাশি  টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ও সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে বড় বড় দুইটি মিছিল সমাবেশে যোগ দেয়। বিকাল ৩ টার দিকে মুক্তি চাই, মুক্তি চাই, এমপি বদির মুক্তি চাই, এই শ্লোগান বুকে ধারন করে মিছিল নিয়ে সভাস্থলে আসে প্রায় ২-৩ হাজার নারী ও যুবতীরা। তার পর মিছিল নিয়ে সভায় অংশ গ্রহন করে রাখাইন সম্পদায়ের দুশতাধিক নারী-পুরুষ। পর্যায়ক্রমে মিছিলে মিছিলে গণসমাবেশে ও দোয়া মাহফিলে আরো যোগ দেয় টেকনাফ বাজার কমিটির বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যবসায়ীরা। বিকাল ৪ টায় উক্ত সভাস্থল ও টেকনাফ বাসষ্টেশন হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এই বিশাল গণসমাবেশ ও গণজোয়ারে পরিণত হয়। সবার মুখে মুখে একটি দাবি অবিলম্বে গরীবের বন্ধু প্রিয় নেতা, অসহায় মানুষের প্রিয় বন্ধু, গরীব দরদী এমপি আবদুর রহমান বদিকে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে আইনী প্রক্রিয়ায় মুক্তি দিতে হবে।

৮ নভেম্বর বিকাল ২টায় টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সামনে এমপি আবদুর রহমান বদির ন্যায় বিচার ও মুক্তির কামনায় বিশাল গণসমাবেশ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহম্মদ, প্রধান অতিথি ছিলেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ শফিক মিয়া, বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে- জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ও টেকনাফ উপজেলার সাবেক সভাপতি জাফর আলম চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক এইচ এম ইউনুছ বাঙালী, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জহির হোসেন এমএ, উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আহমদ, এড: মইনুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী রফিক উদ্দিন, টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন, টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান, টেকনাফ উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজান মিয়া, সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম।

উক্ত সভায় ও দোয়া মাহফিলে এমপি বদির মুক্তির দাবিতে সরকারের প্রতি গঠনমুলক বক্তব্য রাখেন, উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সসম্পাদক রিয়াজুল হক, টেকনাফ পৌর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ইউছুপ মনু, হোয়াইক্যং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা শহিদুল আলম কন্ট্রাক্টর, টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর আবু হারেছ, কাউন্সিলর হোসাইন আহমদ, কাউন্সিলর নাজমা আলম, কহিনুর আক্তার, টেকনাফ সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা: নুর মোহাম্মদ গণি মেম্বার, সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা শাহ আলম সিকদার মেম্বার, সাবরাং ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজু, বাহারছড়ার ইউপি সদস্য সোনা আলী, ইউপি সদস্য আয়াছ, টেকনাফ উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আবুল হোসেন রাজু, টেকনাফ পৌরসভার পৌর যুবলীগের সভাপতি মনজুরুল করিম সোহাগ, বর্তমান সময়ের মেধাবী ছাত্র নেতা, টেকনাফবাসীর গৌরব যুব সমাজের অহংকার চট্টগ্রাম সরকারি সিটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও কক্সবাজারস্থ ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছাত্র নেতা মো. আবদুল্লাহ, টেকনাফ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার আলম, সাবরাং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক আবদুল মোতালেব প্রমূখ।

প্রায় ৩০ হাজার গণসমাবেশ ও দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, এমপি বদি দুনীর্তিবাজ নয়, তিনি দীর্ঘ দিনের সীমান্ত এলাকায় সরকারকে রাজস্ব দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। এই ব্যবসার সফলতা হিসাবে পর্যায়ক্রমে তিনি চার চার বার কক্সবাজার জেলার শ্রেষ্ঠ করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। এমপি বদির বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলায় ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে বেকসুর খালাস পেয়েছেন। শুধুমাত্র সামান্য তথ্য গোপন করার দায়ে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা আইনী প্রক্রিয়ায় ন্যায় বিচারের মাধ্যমে আমাদের প্রিয় নেতাকে মুক্ত করে আনব। তারা আরো বলেন, তিনি কখনো দুর্নীতিবাজ হতে পারে না। দলের কিছু কুচক্রীমহল তার জনপ্রতিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে দিনের পর দিন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই ষড়যন্ত্রটিও তাদের একটি অংশ। তাই আমাদের দাবি ন্যায় বিচার ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমাদের প্রিয় নেতাকে মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়ে আমাদের কাছে ফেরত দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।