অজিত কুমার দাশ হিমু, কক্সভিউ:
পর পর দুইবার বন্যায় আমনসহ বিভিন্ন ফসল হানি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছিল কক্সবাজারের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শেষ পর্যায়ে আমন চাষ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা যদিও আমন লাগানোর মৌসুম প্রায় শেষ। তারপরেও উচ্চ মূল্যে চারা কিনে জমিতে আবারো আমনের চারা রোপন করছে কৃষকরা।
এর মধ্যে জেলায় দুই দুইবার ঢল ও বন্যার ফলে কৃষকের বীজতলা সহ আমন ধান নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয় অতদাঞ্চলের কৃষককুল। ইতিমধ্যে সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠার তাগিদে জেলার সদর, চকরিয়া, পেকুয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ সহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা নতুন করে বীজতলা সহ আমন চাষে মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ছাড়াও পতিত থাকা বেশির ভাগ জমিতে বিভিন্ন মৌসুমী ফসলও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গাছের চারা রোপন করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
সাম্প্রতিক বন্যায় কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয় কৃষিতে। রোপা আমনসহ জমির ফসল প্লাবিত হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগ জমির আমন পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট হয় দীর্ঘদিন পানিতে ডুবে থাকা বিভিন্ন গাছপালাও।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী ক্ষয়ক্ষতির মূল্য দাড়ায় ২৫০ কোটি টাকা। ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দিশেহারা হয়ে যায় কৃষকরা। উচ্চ মূল্যের চারা সংগ্রহ করে রোপন করলেও মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ায় ফলন পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে তারা। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য বিভিন্ন মৌসুমী ফসলের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলদ বৃক্ষের চারা রোপনে সরকারের সহযোগিতা কমানা করছেন।
প্রয়োজনীয় বীজতলা ও চারা না থাকায় এবার বিপুল সংখ্যক আমনের জমি পতিত থাকার আশংকা করছে কৃষকরা।
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের কৃষক আবদুল কাদের জানান, এবারের বন্যায় তিন একর জমির রোপা আমন সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। বেশি দামে আমনের চারা কিনে ১কানি জমিতে লাগাচ্ছি। ধান না হলেও খড় দিয়ে গরুর খাবারটা তো হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের লেট ভ্যারাইটি আমন লাগানোসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফসল চাষের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
পতিত জমিতে লাভজনক মৌসুমী ফসলের বীজ, গাছের চারা, সার ও কৃষি উপকরনসহ কৃষি প্রনোদনা দিবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা কৃষকদের। কৃষি পুর্ণবাসনসহ প্রকৃতির ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে না পারলে এর বিরুপ প্রভাব জীব বৈচিত্র্যের ওপর পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
You must be logged in to post a comment.