সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / কক্সবাজারে ভেটেরিনারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাস উদ্বোধনকালে শিক্ষামন্ত্রী- যে শিক্ষা বাস্তব জীবনে কাজে লাগেনা, সে শিক্ষা অর্থহীন

কক্সবাজারে ভেটেরিনারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাস উদ্বোধনকালে শিক্ষামন্ত্রী- যে শিক্ষা বাস্তব জীবনে কাজে লাগেনা, সে শিক্ষা অর্থহীন

Cox Min Nahid Vetenary University 22.11.15বার্তা পরিবেশক:

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন- যে শিক্ষা বাস্তব জীবনে কাজে লাগে না, সে শিক্ষা অর্থহীন। শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাস্তব ভিত্তিক শিক্ষা দিতে হবে। বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষাই মানুষকে জ্ঞানের রাজ্যে নিয়ে যেতে পারে।

শিক্ষামন্ত্রী ২৩ নভেম্বর রবিবার বিকালে কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগরে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বহি:ক্যাম্পাস ‘ইন্সটিটিউট অব কোস্টাল বায়োডাইভারসিটি, মেরিন ফিশারিজ এন্ড ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন- নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসাবে গড়ে তোলার জন্য বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তারই লক্ষ্যে কক্সবাজার সাগরপাড়ে এ বহি:ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হচ্ছে।

মন্ত্রী আরো বলেন- শুধু আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলে চলবে না, থাকতে হবে নৈতিক শিক্ষাও। যাতে কেউ রাষ্ট্রের অর্থ চুরি না করে, অন্যের অধিকার হরণ না করে।

শিক্ষামন্ত্রী দেশের শিক্ষাব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তনে বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে বলেন- বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতা গ্রহণ করে তখন দেশের শতকরা ৯ ভাগ শিশু স্কুলে যেত না। এখন যায়না শতকরা মাত্র ১ থেকে ২ ভাগ। এছাড়া প্রাইমারী পাশ করার আগে শতকরা ৪৮ ভাগ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ত। বাকীদের মধ্যে নবম শ্রেণী পাশ করার আগেই ঝরে পড়ত শতকরা ৪২ ভাগ শিক্ষার্থী। কিন্তু এখন শিক্ষা ব্যবস্থার সেই করুণ চিত্র বদলে গেছে।

তিনি কক্সবাজারে ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বহি:ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিনটি দেশের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক দিন বলে মন্তব্য করেন।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন ও পুলিশ সুপার কৃষিবিদ শ্যামল কুমার নাথ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন- একসময় স্কুলের পেছনের বেঞ্চগুলো খালি পড়ে থাকত। কিন্তু শিক্ষার উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে এখন স্কুলে শিক্ষার্থীদের জায়গা হয় না।

তিনি খাস জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে না বলে জনগণকে আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের ডীন কক্সবাজারের সন্তান প্রফেসর ড. নুরুল আবছার খান। সুশীল সমাজের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর এমএ বারী, বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক মাস্টার সিরাজুল ইসলাম ও কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন চট্টগ্রামস্থ ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা হাফিজ আহমদ। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও গ্রামবাসীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।

এরআগে মন্ত্রী ও এমপি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি করে বৃক্ষের চারা রোপন করেন এবং পরে প্রধান অতিথি ফিতা টেনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।

মন্ত্রীর এ আগমনকে কেন্দ্র স্থানীয় দরিয়ানগর বড়ছড়া সমাজ কমিটি ও আশ্রায়ণ প্রকল্প এবং যুব সমাজের পক্ষ থেকে সুদৃশ্য ব্যানার সহকারে অসংখ্য তোরণ নির্মাণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী স্থানীয় যুব সমাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

উল্লেখ্য, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য সরকার গত সেপ্টেম্বরে ঝিলংজা মৌজার ২৫০০১ দাগের খাস খতিয়ানভূক্ত ৫ একর জমি বরাদ্দ দেয়। এর মূল্য বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২ কোটি ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ২৬২ টাকা পরিশোধ করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য হওয়ায় জমির মূল্য শতকরা ১০ ভাগ কম ধরা হয়। এই বহি: ক্যাম্পাসের মাধ্যমে এ অঞ্চলে শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের উম্মোচন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ জানান, কোস্টাল বায়ো ডাইভারসিটি ও ফিশারিজ বিষয়ে পড়ালেখা ও গবেষণার জন্য কক্সবাজার শহরতলীর সমুদ্র তীরবর্তী দরিয়ানগর বড়ছড়া সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্থান। এর মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরের মাৎস্য নিয়ে সঠিক গবেষণা করা যাবে এবং শিক্ষার্থীরা বাস্তব সম্মত শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। শিক্ষার্থীদের সঠিক গবেষণা ও বাস্তবসম্মত শিক্ষার জন্য মাঠ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। এ কারণে উক্ত এলাকায় ক্যাম্পাস স্থাপিত হতে যাচ্ছে।

তিনি আরো জানান, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ ও তার বিকল্প ব্যবহার সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়সহ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও গবেষণা, উপকূলীয় পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও বায়ো টেকনোলজির উপর উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণের সুযোগ থাকবে।

তিনি জানান- প্রাথমিকভাবে এই ক্যাম্পাসে প্রতি সেশনে ৭০ জন করে শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হবে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে এবং আরো নতুন নতুন বিষয়ে পড়ালেখার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলের উদ্ভিদরাজি ও মাৎস্য সম্পদের উপর নানা ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কী কী ধরনের প্রভাব পড়ছে তা এই ক্যাম্পাসে গবেষণার ফলে জানা যাবে। বিশেষ করে সমুদ্রসীমা বিজয়ের পর এ নিয়ে তেমন গবেষণা না হওয়ায় এ ক্যাম্পাসে এবিষয়ে একটি উল্লেখযোগ্য গবেষণা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নেও প্রতিষ্ঠানটি ভূমিকা রাখবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/