কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের গত কয়েক দিন ধরে রেজিষ্টার্ড ও নতুন টালের আন রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গাদের মধ্যে অভ্যান্তরীন কোন্দল নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দু’পক্ষই রয়েছে মারমুখী অবস্থানে। এসব ঘটনা নিয়ে ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ফলে দু’পক্ষের মধ্যে যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন সাধারণ শরণার্থীরা।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা শিবিরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও পেশাদার ডাকাত মনির আহম্মদের সাথে গত ২সপ্তাহ পূর্বে রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারপিট লেগে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ৫ আগস্ট ঘটনার প্রতিশোধ নিতে নতুন টালের অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের কেন্দ্রীয় মসজিদ এলাকায় মনির আহম্মদকে না পেয়ে ওখানকার নিরীহ রোহিঙ্গা জাবের আহমদকে বাড়ি থেকে ধরে এনে উপর্যপুরি মারধর করে চুরিকাঘাত করে আহত করে। এ ঘটনা ঘটানোর পরও রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ক্ষান্ত না হয়ে ৯ আগস্ট আবারো অনিবন্ধিত নতুন টালের ক্যাম্প সেক্রেটারী মাষ্টার রাকিবুল্লাহকে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ক্যাম্প সেক্রেটারী মাষ্টার রাকিবের পরিবার পরিজন সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।
স্থানীয় সচেতন এলাকা বাসীর অভিযোগ, পাশাপাশি নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত দু’টি রোহিঙ্গা শিবির হওয়ায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় সময় বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা লেগেই থাকে। এমনকি নানা রকম অপরাধমূলক ঘটনারও অবতারণা হয়ে থাকে এ রোহিঙ্গা শিবিরে। ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট শরণার্থীরা বলছেন, এ সবের নেপথ্যে নতুন টালের মাষ্টার রাকিব উল্লাহর পিতা নাজিমুল হক হত্যাকান্ডের প্রধান হোতা জঙ্গী আবু ছিদ্দিক, মোহাম্মদ নুর, জিয়া, রফিক, নুরুল আলম, ডাইলু, কালাবদা, রুহুল আমিনসহ প্রায় ৪৩ জনের একটি সংঘবদ্ধ অস্ত্রধারী অপরাধী পুরো ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের অত্যচার, নির্যাতন, অপহরণ, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, খুন খারাবির মতো জঘন্য অপরাধ করে বেড়ালেও আইন প্রয়োগ কারী সংস্থার ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় নানা ভাবে চক্রান্ত চালিয়ে ২ ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের মধ্যে দাঙ্গা লাগিয়ে নিজেরা ফায়দা লুটার চেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ শরণার্থী শিবিরটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সন্ত্রাসীরা নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে। নতুন টালের অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা নুরু জানান, রোহিঙ্গা শিবিরটি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় সন্ত্রাসীরা এখানে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
ক্যাম্প সেক্রেটারী মাষ্টার রাকিবুল্লাহ বলেন, ২০০৭সালে সন্ত্রাসীরা দিন দুপুরে আমার পিতাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর থেকে ওইসব সন্ত্রাসীরা আমি এবং আমার পরিবারের উপর নির্যাতন চালিয়ে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে। এ প্রসঙ্গে ক্যাম্প ইনচার্জ দিদারুল আলম নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এতবড় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কত রকম তুচ্ছ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে। তবে উত্তেজনাকর ও উদ্বেগজনক কোন ঘটনা বা পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়নি। বিষয়টি দেখভাল করতে ক্যাম্প পুলিশকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.