মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া:
চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় ৩ ফেব্রুয়ারী বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপে নিহত কক্সবাজারের চকরিয়ার দুই যুবকের লাশ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার সাড়ে নয় মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করার কথা ছিল। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মোহাম্মদ ইব্রাহীম উপস্থিত না থাকায় সব কিছু ঠিকঠাক থাকার পরও লাশ উত্তোলন করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার কবরস্থান থেকে ওই দুইজনের লাশ উত্তোলনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.মাসুদ আলম, চকরিয়া থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর, বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন চৌধুরী জিয়াসহ লাশ উত্তোলন করার জন্য ডোম সবায় উপস্থিতি হন । কিন্তু যে মুহুর্তে লাশ উত্তোলন করা হবে তখনই খবর পাওয়া যায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম হাজির হতে পারেননি। এরপরই পিছিয়ে যায় লাশ উত্তোলন প্রক্রিয়া।
এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলামের নির্দেশে আগামী শনিবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলনের দিন ধার্য্য করা হয়েছে। ২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক প্রাথমিক সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিশ্চিত করতে কবর থেকে লাশ উেেত্তালনের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ৩ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের (ঢাকামেট্রো-ব-১৪-৪০-৮০) যাত্রীবাহী বাস চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় পৌঁছে রাত তিনটা দশ মিনিটে। ওই সময় দুর্বৃত্তরা বাসকে লক্ষ্য করে পেট্রল বোমা ছুঁড়ে মারে। এতে ঘটনাস্থলে ও পরে আটযাত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যায়। তৎমধ্যে চকরিয়ার মোহাম্মদ ইউছুফ (৪৬), রাশেদুল ইসলাম (২৫) ও আবু তাহের (৩৫) নিহত হন। ওই সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত আবু তাহেরের লাশ ময়নাতদন্ত করা হলেও অন্য দুইজনের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া মানবিক কারণে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এঘটনায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইব্রাহিম এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জটিলতার মুখে পড়েন। ফলে তিনি চকরিয়ায় দাফন করা তিনজনের মধ্যে দুইজন গৌবিন্দপুরের আলী আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ইউছুফ ও ছৈয়দ আহমদের ছেলে রাশেদুল ইসলামের মরদেহ কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে ২ সেপ্টেম্বর তাঁদের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আদেশ দেন বিচারক।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, বৃহস্পতিবার লাশ উত্তোলনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিলো। কিন্তু হরতালের কারণে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মোহাম্মদ ইব্রাহীম উপস্থিত না থাকায় লাশ উত্তোলন করা যায়নি। আগামী শনিবার লাশ উত্তোলনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশ দিয়েছেন। এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথেও মুঠোফোনে আলাপ করা হয়েছে।
Home / প্রচ্ছদ / কুমিল্লায় বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপে নিহত- চকরিয়ার দুই যুবকের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা গেলোনা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকায়
You must be logged in to post a comment.