নিজস্ব প্রতিনিধি, নাইক্ষ্যংছড়ি :
রামুর ১২টি বৌদ্ধ মন্দিরে বর্বরোচিত হামলার চর্তুথ বছর পর্দাপণের এ সময়ে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ায় মন্দিরের বেড়া ভেঙ্গে ১টি স্বর্ণ মূতি ও ২টি পিতলের মূর্তিসহ ৩টি মুর্তি আর মন্দিরে ব্যবহার্য সব মালামাল নিয়ে গেছে চোরের দল। এতে এ মন্দিরের ৪ শত সেবকের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার মধ্য রাতে ইউনিয়নের পূর্ববোমাংখিল গ্রামে।
মন্দিরের পুজারী অভিচক্রবর্তী জানান, তিনি প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো সহ ধর্মীয় অর্চনা করে বাড়ি চলে যান। পর দিন শনিবার সকালে এসে আবারও একই ধরনের পূজা-অর্চণা করতে মন্দিরের দরজা খুলতেই দেখতে পান সবই শেষ। এ মন্দিরের বড় স্বর্ণ মূতিটি সহ পিতলের ছোট বাকী দুটো মূর্তি মিলে মোট ৩টি মূর্তিই নেই এ মন্দিরে। মন্দিরের উত্তর পাশের শক্ত বেড়া ভেঙ্গে কে বা কারা এ মন্দিরে ঢুকে পূজার কাজে ব্যবহার্য কাসা, বাদ্য শংখ,শিব লিঙ্গ ও ঘন্টি সহ সব ধরনের পিতল ও অন্যান্য ভাবে তৈরী আসবাবপত্র নিয়ে যায় এ সময়।
হতাশ ও ক্ষোভে জড়ো হওয়া মন্দিরের সেবকরা জানান, ২ শত বছরের এ মন্দিরটির সেবায়েত মৃত সূধাংশু কুমার শর্মার পরে এখানে এ মন্দিরটি দেখাশুনা করতে থাকে সিং পরিবারের সদস্যরা। ঐতিহাসিক বোমাং রাজার জমিদারীর কাচারী খ্যাত এ পূর্ব বোমাংখীল গ্রামের একমাত্র মন্দিরের শতশত সেবক মন্দিরে চুরির ঘটনায় মর্মাহত। এদের অন্যতম অমল, পুজারী অভিচক্রবতী, সেবক পাখি রাণী শর্মা, সমাজ সেবক মো: ইসমাঈল ও ওয়ার্ড মেম্বার আতাউল্লাহসহ সকলের দাবী এ ধরনের কাজ জঘন্য।
এ এলাকায় চোরের উপদ্রব বেড়ে গেছে দীর্ঘদিন। এখানে কোন পুলিশী টহল নেই, নেই কোন পাহারাদারের পাহারাদারী। এ কারনে এসব অঘটন ঘটছে নিয়মিত। এ আগে এ এলাকার প্রায় প্রতিটি গ্রাম্য দোকানে ১ বার থেকে ৬ বার পর্যন্ত চুরি হয়েছে। অথচ এ বিষয়ে আইনী কোন ব্যবস্থা নেই এখানে।
অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার র্শতে এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়ায় চোর ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে। বিশেষ করে গর্জনিয়া ইউনিয়নের বোমাংখিল,বেলতল কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়া ও মৌলবীর কাটায় এসব চোর ডাকাত বাসা বেঁধেছে। এদের মধ্যে অনেককেই প্রকাশ্যে গর্জনিয়া বাজার সহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ায় পুলিশকে ম্যানেজ করে। আর এ কারনে তাদের সাহস বেড়ে চলেছে। এদিকে এ ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল মজিদ গর্জনিয়ার ছুটে আসেন। তিনি পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থান করে ঘটনাস্থলে পাঠান গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির আইসি রমজান হোসেনকে। আর আইসি রমজান হোসেন ওর্য়াড মেম্বার আতাউল্লাহসহ অনেকেই ৩ অক্টোবর শনিবার সকালে এ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বিকেলে গর্জনিয়া পুলিশের আইসি এসআই রমজান হোসেন সাংবাদকদের জানান, চুরি হয়েছে সঠিকই। তবে ছোট ছোট দুটি মূর্তি। এর বেশী আর কোন কথা বলতে চাননি তিনি।
এদিকে মেম্বার আতা উল্লাহ দৃঢ় চিত্তে বলেন, মন্দিরের বড়-ছোট ৩টি মূর্তি সহ অনেক কিছু চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। তবে কে বা কারা এ চুরি করেছে তা বিধাতা ছাড়া কেউই জানেন না।
You must be logged in to post a comment.