কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও এলাকা এবার পঞ্চমবারের মত বন্যার পানিতে ডুবলো। এতে করে দূর্ভোগ আর দূর্গতিতে পড়েছে বৃহত্তর এলাকার লোকজন। আবার গ্রামাঞ্চলের বহু বাড়ীঘর প্লাবিত হয়ে পড়ায় অনেক পরিবার অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। বলতে গেলে গ্রামাঞ্চলের লোকজন অসহায় হয়ে পড়েছে।
যদ্দুর দেখা যায়, ততদুর পানি আর পানি ছাড়া কিছুই নেই। টানা ৪দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত আর ভারী বর্ষণ ফের পঞ্চমবারের মত ঈদগাঁওবাসীকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে বন্যা। অন্যদিকে বিশাল এলাকার সড়ক-উপসড়কে ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন স্মৃতি সরূপ রয়ে গেছে। জানা যায়, গেল বন্যার বেশ কিছুদিন পার হতে না হতে ফের বন্যার সম্মুখীন হয়েছে ঈদগাঁও বাজারের অলিগলিসহ বৃহত্তর এলাকার লোকজন। গত ৩/৪ দিন পূর্বে থেকে প্রচন্ড বৃষ্টিপাতে বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, পোকখালী, চৌফলদন্ডী, ইসলামপুরসহ ঈদগাঁও ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের বাড়িঘরে এবং বাজার এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। যান ও জন চলাচল নিয়ে দুর্ভোগ আর দুর্গতিতে পড়েছে মানুষজন। গেল বন্যার সময় রাস্তাঘাটের সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ পড়ার পাশাপাশি আবারো একই দশায় ভুগছেন এলাকার লোকজন।
এদিকে দক্ষিণ চট্টলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও বাজারজুড়ে পানিতে ভাসছে দোকানপাট। গেল বন্যায় শতকরা ৮০ ভাগ দোকানে বন্যার পানি প্রবেশ করে প্রচুর পরিমাণ মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বিগত বন্যার সময় ব্যবসায়ীরা বাজারের ব্যাপক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের পঞ্চমবারের মত একই দশায় পড়েছে ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে তাদের চোখে মুখে মলিন চেহারা ভেসে উঠছে। আবার ঈদগাঁও নদীর পার্শ্ববর্তী দোকানপাটে খালের পানিতে মালামাল নষ্ট হচ্ছে।
অপরদিকে ঈদগাঁও মাইজপাড়ার ভরাখাল দিয়ে ভারী বর্ষণের পানি সুষ্ঠুভাবে যাতায়াত করতে না পারায় খালের পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে মহাদুর্ভোগে পড়েছে এলাকার মা-বোন। এছাড়াও উপকূলীয় এলাকা পোকখালী, গোমাতলী ও চৌফলদন্ডীর বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে এখনো বন্যার পানিতে পানিবন্দী অবস্থায় অসহায় লোকজন দিন কাটাচ্ছে বলে জানান অনেকে।
ইসলামাবাদের পাহাশিয়াখালী, টেকপাড়া, ইউছুপেরখীল, ঈদগাঁওয়ের ভোমরিয়াঘোনা, মাইজপাড়া, ভাদিতলা, দরগাহ পাড়া, হাসিনা পাহাড়, মাছুয়াখালী, কালিরছড়া, চাঁন্দেরঘোনা, মেহেরঘোনা, পালপালা, কুলাল পাড়া, গরুর হালদাসহ প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে বন্যার পানিতে সয়লাব রয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাত কিছুতেই কমছে না। খালবিল আর নদীনালা যেন পানিতে একাকার।
অপরদিকে ফের বন্যায় বাঁশঘাটার ব্রীজটি ভেঙ্গে গিয়ে একটি টমটম বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। সে সাথে বিপুল সংখ্যক লোকজনের চলাচলে নিদারুন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে প্রায়শঃ। অন্যদিকে বন্যার পানিতে ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ডোবা রয়েছে। দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাঙ্গনে এসে মহাবিপাকে পড়তে দেখা গেছে। আবার ঈদগাঁও ভূমি অফিস, জালালাবাদ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র বর্তমানে পানিবন্দী। চৌফলদন্ডীর ওয়াপদা বাঁধ সংস্কার না করলে বর্ষা মৌসুমে আরো মহা মরণ দশায় ভুগতে হবে বলে জানান এক জনপ্রতিনিধি। বিশাল এলাকার গ্রামগঞ্জের লোকজন রাখে আল্লাহ মারে কে অবস্থায় দিনাতিপাত করছে বলে জানা যায়।
এছাড়া রোপিত আমন ধানের চাষাবাদ নিয়ে মহা চিন্তিত হয়ে পড়েছে বৃহত্তর এলাকার কৃষককুল। সর্বোপরী বিবেচনাপূর্বক বৃহত্তর ঈদগাঁওকে বন্যা দূর্গত এলাকা ঘোষণা করে দ্রুততম সময়ে গ্রামাঞ্চলে ত্রাণ সহায়তা পৌছানোর জোর দাবী জানান সচেতন মহল।
You must log in to post a comment.