মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া:
যতই ঈদ কাছে আসছে ততই ব্যস্ততা বাড়ছে কামারদের। কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কামারের দোকানে দা-ছোরা তৈরীর ধুম পড়েছে। উদ্দেশ্য পুরনো দা-ছোরায় শাণ দেয়া এবং নতুন দা-ছোরা তৈরী করা।
কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় শতাধিক দোকানের পাশাপাশি যথা সময়ে চুক্তি অনুযায়ী দা-ছোরা সরবরাহ দিতে নিজেদের বাড়ীতেও বিশ্রামহীন কাজ করেই চলছে কামাররা। দু’উপজেলায় অন্তত লাখ পরিবার গবাদী পশু কোরবানী দেবেন। এই পশু জবাই ও মাংস কাটতে ছোট-বড় দা-ছোরার প্রয়োজন হয়। তাই অনেক পরিবার পুরনোগুলো শাণ দিলেও আবার অনেকেই নতুন তৈরী করতে অর্ডার দিচ্ছে ।
চকরিয়া পৌরশহরের বালিকা বিদ্যালয় সড়কস্থ কামারের দোকান মালিক অনিল কর্মকার বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের কোরবানীর ঈদের পূর্বে আমাদের ভালো রোজগার হয়। এসময় নিয়মিত কর্মচারী ছাড়াও অল্পদিনের জন্য অতিরিক্ত কর্মচারী নিয়োগ দিতে হয় । এই ঈদের রোজগার দিয়ে আমার মতো মালিকসহ দোকান কর্মচারীরা বছরে একবার পরিবারের ভরণ-পোষণ যোগান দিই ।
কামারের দোকানে আসা বরইতলীর নাসির উদ্দিন বলেন, ঘরে দুটি ছোট দা ছিলো। তা শাণ দিতে এনেছি। গরু জবাই করতে একটি বড় রামদা’র পাশাপাশি দুটি চোরা তৈরী করতে অর্ডার দিয়েছি। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবছর ১কেজি ওজনের দা তৈরী করতে ২’শ টাকা বেশী খরচ পড়ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জিদ্দাবাজারের নিহার রঞ্জন কর্মকার বলেন, লোহার দাম ছাড়াও শ্রমমূল্য বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে। এতেও বিগত বছরের চেয়ে মালিকদের আয় হচ্ছে কম।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ১টি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন নিয়ে চকরিয়া এবং পেকুয়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রতিটিতেই সরগরম কামার পল্লীতে। অভিজ্ঞ কামাররা অর্ডার দেয়ার সাথে সাথেই বুঝে নেয় দা-ছোরা কিজন্য বানানো হচ্ছে। ব্যতিক্রম দেখলেই অর্ডার নিচ্ছে না কেউ হিতে বিপরীত হওয়ার আশংকায়। বুধবার বেশ ক’টি দোকান ঘুরে দেখা গেছে নতুন অর্ডার নিচ্ছে না কোন কামার। কোরবানীর ঈদ ঘনিয়ে আসায় যা অর্ডার নিয়েছে তাই যথা সময়ে দেওয়ার জন্য লাগাতার কাজ করে যাচ্ছে কামাররা।
You must be logged in to post a comment.