এই দুই শাবক দ্বিতীয় দফায় জন্ম নিয়েছে তিনমাস পূর্বে। তবে শাবক দুটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সুখবরটি গোপন রেখেছিল কক্সবাজারের চকরিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। অবশেষে সেই গোপনীয়তা ফাঁস হয়েছে শাবক দুটি আত্ম নির্ভরশীল হয়ে উঠার সাথে সাথে। এই শাবক দুটির নাম রাখা হয়েছে ‘নয়ন ও আঁখি’।
রবিবার সকাল ১১টা। কক্সবাজারের চকরিয়াস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ঘুরতে ঘুরতে বাঘের বেস্টনিতে দেখা মিললো জয়-জুঁইয়ের সংসারে আসা শাবক ‘নয়ন ও আঁখির’। তারা মা জুঁইয়ের সাথে খেলছিল। একটু একটু করে লাফাতে চাচ্ছে। আর মানুষ দেখলে কিলবিল চোখ তুলে তাকিয়ে থাকছে। সদ্য জন্ম নেয়া এই দুই শাবক এখন স্ব-মহিমায় ফিরছে।
সরজমিন সাফারি পার্ক ঘুরতে গেলে বাঘ বেস্টনীতে দেখা মেলে বেশ কিছু নারী-পূরুষ দর্শনার্থীর। তারা হই-হুল্লোড় করছে। অনেকেই মোবাইলে ছবি তুলছিলো। ঘটনা জানতে বেস্টনির কাছে গিয়ে দেখা যায় জয়-জুঁইয়ের সংসারে নতুন দুই অতিথি আগমনের দৃশ্য।
সাফারি পার্কের রেঞ্জ অফিসার নুরুল হুদা বলেন, ৫ মে সন্ধ্যায় জুঁই জন্ম দেয় তিন শাবক। ওই শাবক চোখ ফোটার আগেই মারা যায়। শাবক তিনটি জন্ম নেয়ার পর জানাজানি হওয়ায় ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা একের পর এক ছবি তুলতে গিয়ে নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটে ছিল। তাতেই তিন ব্যাঘ্র শাবক মারা যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই এবার কঠোর নিরাপত্তা ও গোপনিয়তা অবলম্বন করা হয়। ব্যাঘ্র শাবক দুটি বাঁচিয়ে রাখতে এই পরিকল্পনা। নির্দেশনা ছিল শাবক দুটির বয়স চারমাস পুরো হলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের জানানো হবে।
রেঞ্জ অফিসার আরো বলেন, ব্যাঘ্র শাবক দুটি জন্ম নেয়ার ১৫ দিন আগে থেকেই মা বাঘ জুঁইকে পর্যবেক্ষণে রাখতে ছোট এনক্লোজারে সিসি ক্যামরা বসানো হয়। শাবক জন্ম নেয়ার পরও ওই ক্যামরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শাবক দুটিকে প্রথমে কৃত্রিম খাওয়ার দেয়া হলেও বর্তমানে মায়ের দুধ খাচ্ছে। জুঁইকে মাংস দেয়া হলে ওই মাংসও একটু একটু খেতে চাচ্ছে শাবক ‘নয়ন ও আঁখি’ ভাই-বোন জুটি। আশা করছি প্রথমবার জন্ম নেয়া ব্যাঘ্র শাবক ‘শ্যামল-সজল-শেফালী’ মারা যাওয়ায় জয়-জুঁইয়ের পাশাপাশি পার্কের সবাই দু:খ-কষ্ট ও হারানোর বেদনায় ভুগছিল। দ্বিতীয় দফায় জন্ম নেয়া নয়ন ও আঁখিকে বাঁচিয়ে রেখে পুরনো কষ্ট লাঘব করা সম্ভব হবে।
You must be logged in to post a comment.