কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের কম্পাউন্ডে সরকারি অর্ধ ডজন ভবন বিগত ২৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। পরিত্যক্ত ভবনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজর না থাকায় প্রায় ভবনের দরজা জানালা চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরদল। আবার দেখা গেছে ভবনের ছাঁদ ভেঙে রড চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে দূর্বৃত্তরা। ৪ ডিসেম্বর সরজমিনে গেলে কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের কম্পাউন্ডে টু ইন কোয়াটার আর প্রশাসনিক ভবনগুলোর এ দৃশ্য দেখা যায়।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে প্রকাশ, কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডে টু ইন কোয়াটার তিনটি ও প্রশাসনিক কাম-অডিটরিয়াম ভবন একটি দীর্ঘ দুই যুগ ধরে সরকারিভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে বিগত ২৭ বছর পূর্বে। এ ভবনগুলো ভেঙে ফেলার জন্য অনুমতি ছেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতনের নিকট পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান। এ ছাড়াও উপজেলা পরিষদ সমন্বয় সভায়ও ভবনগুলো ভেঙে ফেলার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুমতি ছেয়ে জেলা প্রশাসক-কক্সবাজার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সভার সিদ্ধান্ত কপি প্রেরণ করা হয়েছে। একের ভিতর দুই অর্থাৎ অফিস কাম আবাসিক ভবন (টু ইন কোয়াটার ভবন) ও প্রশাসনিক কাম অডিটরিয়াম ভবনগুলো দেশ স্বাধীনের পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছিল। এ ভবনগুলো সরকারিভাবে বিগত ১৯৯১ সনের ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এ জন্য সরকারি উদ্যেগে ১৯৮৫ সনে নতুন করে উপজেলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করার পর এ ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের এক কর্মকর্তা জানান, পরিত্যক্ত ভবনের দরজা জানালা দূর্বৃত্তরা খোলে নিয়ে গেছে। বর্তমানে পরিত্যক্ত ভবনের ছাদঁ ভেঙে রড খোলে বিক্রি করে যাচ্ছে এক শ্রেণীর দুর্বৃত্তরা। পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে মাদক, গাঁজা, ইয়াবা সেবনসহ অনৈতিক কর্মকান্ডের আস্তানা হিসেবে বেঁছে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে তরুণ আ’লীগ নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম লাল জানায়, উপজেলা পরিষদের ক্যান্টিনের পাশের পরিত্যক্ত ভবনটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রতিদিন উপজেলা ক্যান্টিনে সরকারী কর্মকর্তাসহ অসংখ্য লোকের সমাগম হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি যে কোন সময় ক্যান্টিনের উপর ধসে পড়ে ব্যাপক প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। বড় ধরনের অঘটন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ভবনগুলো পরিত্যক্ত থাকায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দূর্বৃত্তরা পরিত্যক্ত ভবনের দরজা জানালা অনেক আগেই খোলে নিয়ে গেছে। বর্তমানে রাতের অন্ধকারে ও অফিস বন্ধের সময় দূর্বৃত্তরা ছাদের রড চুরি করতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ছাদ ধসে পড়ে প্রাণ নাশের আশংকা দেখা দিয়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ.টি.এম নুরুল বশর চৌধুরী বলেন, উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডে দীর্ঘদিন ধরে অর্ধ ডজন ভবন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। এ ভবনগুলো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় যে কোন সময়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসনিকভাবে ভবনগুলো ভাঙার জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছেয়ে উপজেলা পরিষদ থেকে একাধিকবার পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
এ ব্যাপারে সদ্য নিবার্চিত কুতুবদিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের বেশ কয়েকটি ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। যে কোন সময় ভবন গুলো লোকালয়ে ধসে পড়ে ব্যাপক প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙ্গে অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
You must be logged in to post a comment.