গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ :
বাংলাদেশের দক্ষিণে কক্সবাজার জেলার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা ও ৫০ কিলোমিটার অরক্ষিত বেড়িবাধ দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কিছুতেই থামছেনা। আবার দেশের ভোটার তালিকা হালনাগাদের খবর শুনে এই রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ আরো বৃদ্ধি পায়। এরা সু-কৌশলে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করে ভোটার হয়ে যায়। ৩০ আগষ্ট উপজেলা জুড়ে ভোটার হালনাগাদের প্রক্রিয়া শুরু হলে অনেক রোহিঙ্গা ভোটার ফরম পূরণ করে। তার পর উপজেলা নির্বাচন কমিশন ও যাচাই-বাচাই কমিটির হাতে ধরা পড়ে তা বাতিল হয়ে যায়।
সুত্রে আরো জানা যায়, অনেক রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলায় বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভোটার অর্ন্তভুক্তি হয়ে গেছে। এই ভাবে বছরে পর বছর টেকনাফ উপজেলা রোহিঙ্গা আগ্রাসনের শিকার ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি লেগেই আছে।
টেকনাফ ৪২ বিজিবির সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ অক্টেবর পর্যন্ত ২৯০৯ জন রোহিঙ্গা টেকনাফ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করার সময় সীমান্ত প্রহরী বিজিবি সদস্যদের হাতে আটক হয়। আটককের পর তাদেরকে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। অন্য দিকে বিভিন্ন সুত্রে খবর নিয়ে জানা যায়, বিজিবির সদস্যদের ছোখকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ লেগে আছে। সরকার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গত দুই একবছর ধরে একটি হার্ড লাইনের রুপরেখা তৈরী করার প্রথ হাতে নেয়। এবং জাতীয় কৌশল পত্র বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে। বিভিন্ন দেশের কুটনৈতিক সাথে আলাপে তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোন কিছুই কাজে আসছে না। এর কারন খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, টেকনাফ উপজেলা জুড়ে নাফনদীর মায়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষা র্দীঘ এলাকাটি অরক্ষিত নেই কোন কাঁটা তারের বেঁড়া সীমান্তের নৌশ প্রহরী জনবল কম সাগরে কোষ্ট গার্ড সক্ষমতা কম ইত্যাদি।
উলেখ্য, ২০১৪ সালে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করার জন্য সরকার প্রশাসনকে দিয়ে একটি মাষ্টার প্লানের রুপরেখা হাতে নেয়। সেই রুপরেখা হচ্ছে ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাধ পুর্ন নির্মাণ, সীমান্তের কাঁটার তারের বেঁড়া, বিজিবির সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, নৌ-সমুদ্র পথে কোষ্ট গার্ড সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি, বর্ডার পাস ইস্যু নিয়ে নানান রকম কৌশলী তত্পরতা বৃদ্ধি। নাফনদীতে জেলেদের উপর নজরদারি জোরদার এত কিছু হাতে নেওয়ার পরও কোন কাজের বাস্তবায়ন না হওয়ায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
টেকনাফ ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ জানান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে প্রতিনিয়ত আমাদের বিজিবি সদস্যরা দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এবং আটক করে স্বদেশে ফেরত পাঠায়। গত চলতি বছরে আমাদের বিজিবি সদস্যদের হাতে প্রায় ৩ হাজার রোহিঙ্গা আটক করে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ করার জন্য আমাদের পাশাপাশি প্রশাসনের অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা এগিয়ে আসলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কমে আসবে।
Home / প্রচ্ছদ / টেকনাফে চলতি বছরে প্রায় ৩ হাজার রোহিঙ্গা স্বদেশে ফেরত বাস্তবায়ন হয়নি : রোহিঙ্গা প্রতিরোধ রুপরেখা
You must be logged in to post a comment.