মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষকেরা ধানের আবাদ করেন। কিন্তু বাজারে দাম কম থাকায় ধান আবাদের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন তারা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বগাচাষিরা। উৎপাদিত দানের অধেক জমির মালিককে দেয়ার পর তারা যে ধান পান তাতে তাদের উৎপাদন খরচই ওঠে না। এ জন্য বাধ্য হয়ে বর্গাচাষিরা জমি ফিরিয়ে দিচ্ছেন। এতে বেকায়দায় পড়েছেন জমির মালিকরা। তারা লোকসান মেনে নিয়েই এখন নিজেদের জমি নিজেরায় আবাদ করছেন। আর এখন উখিয়াতে আমন ধান চাষের পুরো মওসুম চলছে।
সরেজমিন উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউয়িনের গোরাইয়ার দ্বীপ এলাকায় গিয়ে কথা হয় জমির মালিক জাহাঙ্গীর আলম সিকদার ও বর্গাচাষি ইসমাঈলের সাথে। জমির আবাদ নিয়ে এরা দু’জনই তাদের হতাশার কথা জানান। কৃষক ইসমাঈল জানান, এ বছর নিজের ৬০ শতাংশ ছাড়াও ৮০ শতাংশ জমি বগা নিয়ে ধানের আবাদ করছেন। গত মওসুমে তার বগা জমি ছিল ১২০ শতাংশ। কিন্তু ধানের দাম কম থাকায় তিনি এবার জমির মালিক জাহাঙ্গীর আলম সিকদারকে ৪০ শতাংশ জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, গত বছর ধানের আবাদ করে লস খাইসি। তাই আস্তে আস্তে জমির মালিককে জমি ফিরাইয়া দিতেছি। কি আর করব। আমরা কৃষক মানুষ। কাজের মধ্যে থাকতে হয়। তাই ক্ষতি জেনেও ধান আবাদ করতেছি। তবে সরকার যদি ধানের দাম না বাড়ায় তাহলে বগাজমি আরো কমিয়ে দেয়া হবে।
গত বছর ৩ কানি জমি বগা নিয়ে ধান আবাদ করেছিলেন, একই গ্রামের কৃষক ফকির আলম। কিন্তু ধান আবাদ করে লোকসান হওয়ায় তিনিও জমির মালিককে ২ কানি জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন।
১ কানি জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করছিলেন ফকির আলম। তিনি ক্ষোভের সাথে জানান, সারা বছরই চাল কিনে খেতে হয়। তাই ক্ষতি হলেও কষ্ট করে ধানের আবাদ করি। তাতে অন্তত কিনে খাওয়ার ঝামেলাটা থাকে না। ওই এলাকার বড় কৃষক ইসমাঈল। তিনি বলেন, ধান আবাদ করে লাভ হয় না। তাই আবাদের ঝামেলাও মাথায় নিতে ইচ্ছে করে না। কি করব ভাই, বাধ্য হয়ে লোকসান মেনেই ধানের আবাদ করতেছি।
উখিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষিবিদ বদিউল আলম জানান, গত বছর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অজিত না হলেও আশা করছি এবার হবে। তিনি বলেন, বাজারে ধানের দাম কম। এটা অবশ্যই কৃষকের জন্য হতাশার কারণ। তবে আগামীতে ধানের দাম বাড়তে পারে।
You must be logged in to post a comment.