সাম্প্রতিক....
Home / জাতীয় / নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট

নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট

জাতীয় প্রেসক্লাবে রবিবারের সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পাশাপাশি নির্বাচনের তারিখ এক মাস পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে জোটটি।

১১ নভেম্বর, রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐক্যফ্রন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল বলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও সাত দফা দাবি থেকে সরে আসেননি তারা; বরং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নির্বাচনের তফসিল এক মাস পেছানোর দাবি।

ড. কামাল বলেন, একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সমতল ক্ষেত্র) তৈরি করেনি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গণতন্ত্রের সংকট সমাধানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সবসময় আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতাকে গুরুত্ব দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে ঐক্যফ্রন্ট সংলাপের জন্য সরকারকে আহ্বান জানায়। সেই আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি দলের আমন্ত্রণে ১ ও ৭ নভেম্বর গণভবনে সংলাপ হয়েছে।’

‘দুঃখজনকভাবে এই সংলাপে সরকারি দলের পক্ষ থেকে বর্তমানের গভীর সংকট উত্তরণের পথে ন্যূনতম সমঝোতা করার মানসিকতা আমরা দেখতে পাইনি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা সরকারের কাছে যে ৭ দফা দাবি পেশ করেছিলাম, প্রায় সবগুলো দাবিই সরকার নাকচ করে দিয়েছে। এমনকি বর্তমান সংবিধান সংশোধন না করেও যে দাবিগুলো পূরণ করা যায়, তার প্রায় সবগুলোর ব্যাপারে তারা কোন আশ্বাস তো দেনইনি. উপরন্তু সেগুলোর কয়েকটি সংবিধান-বহির্ভূত বলেও বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।’

সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘সংলাপে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন সভা-সমাবেশ করার ওপরে কোন নিষেধাজ্ঞা থাকবেনা এবং ‘‘গায়েবি মামলা’’সহ নানা রকম রাজনৈতিক মামলায় যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের মুক্তি দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে এই ধরনের হয়রানিমূলক মামলা আর দেওয়া হবে না। এরপর ঢাকা ও রাজশাহীতে আমাদের ‍দুটি জনসভা হয়েছে। দুটো জনসভাতেই লিখিত অনুমতি দিতে দেরি করে এবং সরকারি মদদপুষ্ট পরিবহন সংকট সৃষ্টি করে জনসভায় মানুষের অংশগ্রহণের পথ অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি রাজশাহী সঙ্গে আশপাশের অনেক জেলার বাস যোগাযোগ বন্ধ ছিল।’

‘অন্যদিকে এই দুই দিনের জনসভাকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শত শত নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। হয়রানিমূলক গ্রেফতার বন্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশ্বাসের পর একদিনে এক হাজার ২০০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে দুটো ব্যাপারে সরকারপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিল সেগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যখন অবিশ্বাস্য রকম বৈপরীত্য দেখা যায়, তখন আমাদের ধরেই নিতে হয়, সরকার আসলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ন্যূনতম সমঝোতা করার ক্ষেত্রে আন্তরিক ছিল না।’

নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ বলে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে তার দায়িত্ব পালন না করে সরকারের অাজ্ঞাবহ হয়ে থেকেছে। সেটা এই কমিশনের অধীনে হওয়া নির্বাচনগুলো দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সেই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার নির্ধারিত ৯০ দিনের ৩৫ দিন বাকি থাকতেই তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করল কমিশন। অথচ ১৯৯৬ সালে নির্ধারিত ৯০ দিন সময় শেষ হওয়ার ১৩ দিন আগে, ২০০১ সালে ১২ দিন ও ২০০৪ সালে ২০ দিন আগে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল।’

‘তফসিল ঘোষণার পর দেশের নানা স্থানে সরকারি দলের আনন্দ মিছিলই প্রমাণ করে নির্বাচন কমিশন আসলে সরকারের চাহিদামতো তফসিল ঘোষণা করেছে। সরকারি দলের তফসিল পেছানোর আহ্বান না জানানো এবং নির্বাচন কমিশনের তড়িঘড়ি তফসিল ঘোষণা আবারও প্রমাণ করে সরকার আসলে আলোচনার মাধ্যমে কোনো সমঝোতা চায়নি। এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, সরকারের যাবতীয় চেষ্টার উদ্দেশ্য হলো, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনের বাইরে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচন করা।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম আবদুর রব, বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদ প্রমুখ।

এর আগে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে অধিকাংশ নেতা মত দিয়ছেন। র‌বিবার বিএনপি নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি দেবে।

জোটভুক্তভাবে নিবন্ধিত যেসব রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, তাদের তালিকা পাঠানো হবে এই চিঠিতে।

ওই নেতারা আরও জানান, শরিক দলগুলোর নেতারাও নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে জোটগতভাবে নির্বাচন করার পাশাপাশি কোন প্রতীকে নির্বাচন করবেন, তা জানাবেন।

সূত্র:মোক্তাদির হোসেন প্রান্তিক-priyo.com;ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগড়ে পাহাড়ি ঢলে বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন : পুনর্বাসনের সহযোগিতা কামনা 

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও : চলমান বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে ঈদগড়ে এবার একাধিক বসতবাড়ি ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/