পার্বত্য এলাকায় উচুঁ পাহাড় ও টিলা ভূমিতে জুম চাষাবাদ করে ভাগ্য পরিবর্তনে আশা করছে হাজারো জুম্ম কৃষক-কৃষাণী। বান্দরবানের প্রতিটি জনপদে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পাহাড়ের চূড়ায় জুম চাষ করছে পাহাড়ে বসবাসকারী কৃষিজীবিরা। পাহাড়ের পরতে পরতে এখন জুম ধানের সবুজ বিপ্লব চোখে পড়ছে পথচারীদের। কৃষকের চোখে-মুখে অপেক্ষা করছে হাসির ঝলক। চলতি সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি এ অঞ্চলে জুম কাটার হিড়িক পড়বে। প্রকৃতি সহায়ক হলে ভালো ফলনের আশাবাদী জুম চাষীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লামা উপজেলা সবুজ পাহাড় বেষ্টিত টিলাভূমি বেশি। এখানকার জনগোষ্টিরা জুম চাষে অভ্যস্থ। শুধু তাই নয় ওরা পারদর্শি ও বটে। যার কারণে বাংলা সালের চৈত্র মাসের শুরুতে বন-জঙ্গল কেটে পাহাড়ে আগুন দিয়ে পরিষ্কার করে ভূমি। পরে তাতে জুম ধান রোপন করা হয়।
পার্বত্য বান্দরবান জেলার রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম ও লামায় বিভিন্ন পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে জুম ক্ষেতে ধান আসতে শুরু করেছে।
জুমিয়রা জুম ধানের পাশা পাশি বিভিন্ন রকমের মিশ্র সবজি চাষ করেছে। লামা উপজেলার জুম চাষী অংক্যজা মার্মা, উমংচিং মার্মা, ছাচিং মার্মা, উগ্যজাই মারমাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখন জুম ক্ষেতে ফসল আসতে শুরু করছে। জুম বেগুন, মরিচ, জুম ভুট্টা, মারফা (শসা), ঢেঁড়শসহ জুমের নানা প্রজাতির শাকসবজি ও ফসল বাজারে বিক্রি করছে।
বাজারে এখন শাক সবজির চাহিদা ও মূল্য বেশি হওয়াতে জুমিয়রাও বেজায় খুশি। ছোট নুনান বিল গ্রামের উচিহ্লা মার্মা বলেন, জুম ক্ষেতে জুম ধান পাকতে শুরু করছে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে জুম ধান জুমিয়রা কাটতে পারবে।
তবে এসব কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন সময় জুম ফসলে পোকার আক্রমণ হলেও কৃষি অফিসের সহযোগিতা পাওয়া যায় না। কৃষি মাঠ কর্মকর্তারা সরজমিনে যেতে দেখে না কেউ! কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে ফসল ভালো হতো।
এ প্রসঙ্গে লামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রুস্তম আলী বলেন, জুম চাষীরা সাধারণত নিজস্ব আদি পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে থাকে। তাদেরকে পরামর্শ দিলে নিতে চায় না। তবুও কোন কৃষক রোগবালাই সর্ম্পকে জানতে কিংবা পরামর্শ নিতে চাইলে আমরা অবশ্যই তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকি।
You must be logged in to post a comment.