সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়ংকর সন্ত্রাসী

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়ংকর সন্ত্রাসী

প্রতিকী ছবি

হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী রোহিঙ্গা জঙ্গী গ্রুপের অপতৎপরতা ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ঘটে চলেছে ভয়াবহ সব কান্ড। রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং নবগঠিত আকামুল মুজাহেদীন- এর (এএমএম) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গিরা টেকনাফের নয়াপাড়া ও লেদা এবং উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে অবস্থান করে সশস্ত্র জঙ্গি গ্রুপকে সংগঠিত করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপাওে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে।

এরপর সংস্থাগুলো তৎপর হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে তাদের অভিযানে আটক হয়েছে কয়েকজন। নয়াপাড়া ক্যাম্প সংলগ্ন আনসার ব্যারাকে হামলা ও অস্ত্র লুটের অন্যতম হোতা রোহিঙ্গা জঙ্গি গ্রুপের তিন সদস্য খাইরুল আমিন, মাষ্টার আবুল কালাম আজাদ ও হাসান আহমদকে গত ৯ জানুয়ারি কুতুপালং ক্যাম্প থেকে আটক করে র‌্যাব। তাদেও নিয়ে র‌্যাব সদস্যরা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু পুরানপাড়ার গহীন অরণ্যে অভিযান চালায়। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন ধরনের ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২১৫ রাউন্ড গুলি। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে ৫টি গত বছরের ১২ মে নয়াপাড়া আনসার ব্যারাক থেকে লুট হয়েছিল বলে সনাক্ত করেন আনসার ভিডিপির মহাপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান।

সর্বশেষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কুতুপালং ক্যাম্প থেকে আটক হয়েছে আরেক শীর্ষ জঙ্গি নুরুল আলম। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আনসার ক্যাম্পের বাকি ছয়টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে র‌্যাব ৭। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার গহীন পাহাড়ি এলাকা থেকে সেগুলো উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজারস্থ র‌্যাব-৭ এর কোম্পানি কমান্ডার আশেকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, আমাদের কাছে খবর ছিল টেকনাফের লেদা আনসার ক্যাম্পের হামলার মূল হোতা রোহিঙ্গা জঙ্গি নুরুল আলমসহ কয়েকজন কুতুপালং ক্যাম্পে অবস্থান করছে। খবর পেয়ে র‌্যাবের একটি টিম রাতে অভিযান চালায়। আটক নুরুল আলমের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা আনসার ব্যারাকে হামলা চালিয়ে ক্যাম্প কমান্ডার আলী হোসেনকে হত্যা করে। লুট করে নিয়ে যায় ১১টি অস্ত্রসহ ৬৭০ রাউন্ড গুলি। লুন্টিত সব অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। আটক হয়েছে এর সঙ্গে জড়িত ৬ জন জঙ্গি। জঙ্গি আটক ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গত ১ মার্চ ঘটনাস্থল ঘুমধুম গহীণ অরণ্যে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, জঙ্গিরা যত শক্তিশালি হোক, তাদেরকে খুঁজে বের করে আটক করতে আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সদা প্রস্তুত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে র‌্যাবের ভূমিকা প্রশংসনীয়।

তিনি আরো বলেন, আপনারা সবাই জানেন, রোহিঙ্গা মুসলিমরা সবকিছু হারিয়ে এদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা আমাদের প্রতিবেশি মুসলিম ভাই। এদের প্রতি মানবিক কারণে আমাদের সদয় হতে হবে। তবে জঙ্গিদের ব্যাপারে আমরা কঠোর। উখিয়া ও টেকনাফের ৩টি ক্যাম্পে ২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

এ ব্যাপারে পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় এখানে সন্ত্রাসী জঙ্গিরা  সহজে আত্মগোপন করে থাকতে পারে। তাছাড়া ক্যাম্প গুলোর পাশে রয়েছে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা। ফলে আস্তানা গড়ে অবস্থান করার সুযোগ রয়েছে। এখান তেকেই আনসার ব্যারাকে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে তালিকাভূক্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজার। অথচ সেখানে তালিকা বহির্ভুত দেড় লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তাদের ওপর সরকারি কোনো সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নেই।

মিয়ানমারের মংডুতে গত ৯ অক্টোবর পুলিশ বাহিনীর ৪টি ক্যাম্পে একসঙ্গে হামলা চালিয়ে শক্তির বৃথা জানান দেয় আকামুল মুজাহেদীন (এএমএম) ইন্টারনেটে ভিডিও আপলোড কওে এ হামলার দায় স্বীকার করে সংগঠনটি। এরপর রোহিঙ্গা জঙ্গিদের ধরতে অভিযানে নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তারা রোহিঙ্গাদের অন্তত ২০ গ্রামে আগুন দিয়েছে। জ্বালিয়ে দিয়েছে বাড়িঘর, গোলার ধান, ক্ষেতের ফসল। নির্বিচারে হত্যা করেছে প্রায় সাত শতাধিক নিরীহ ব্যক্তিকে। ধর্ষিত হয়েছে অনেক নারী-শিশু। ফলে দলে দলে রোহিঙ্গারা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আসে।

 

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর সংবাদকর্মী আবু হেনা সাগরের মাতা অসুস্থ : দোয়া কামনা 

  বার্তা পরিবেশক : কক্সবাজারে ঈদগাঁও উপজেলার সংবাদকর্মী এম আবুহেনা সাগরের মাতা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের ইবনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/