অজিত কুমার দাশ হিমু, কক্সভিউ:
পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে প্রস্তুত হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের হোটেল মোটেল জোনসহ পর্যটন স্পট গুলো। পর পর দুইবার বন্যা ও প্রবল বর্ষণের মৌসুম বর্ষা শেষ হওয়ায় ঈদের দিন থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের কক্সবাজারে আগমন ঘটবে। এবার অন্তত লক্ষাধিক পর্যটকের পদাভারে মুখরিত হয়ে উঠবে। তাদের বরণের সব প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে বলে জানান পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
এবার শুধু কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত নয়, পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠবে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, ইনানী পাথুরে বীচ, রামুর দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধ পুরাকির্তি এলাকা, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির ও রাখাইন পল্লী, ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক, হিমছড়ির অপরূপ ঝর্ণা, দরিয়ানগরসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট।
বিশেষ করে ঈদের দিন থেকে পর্যটকারণ্য হয়ে পড়বে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের জেলা কক্সবাজার। সৈকতের বালিয়াড়ীতে দাঁড়িয়ে পড়ন্ত বিকেলে সূর্যাস্ত অবলোকন, হাজার হাজার নারী-পুরুষের মহামিলন এবং সব বয়সের মানুষের উচ্ছ্বাস রাঙ্গিয়ে তুলবে সাগরকন্যা কক্সবাজারকে।
এবার দেশীয় ও বিদেশী সবমিলিয়ে লক্ষাধিক পর্যটক সমাগমের প্রস্তুতি সেরে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব ওমর সুলতান।
তিনি বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে দেশের ও কক্সবাজারের পরিবেশ পরিস্থিতি অনেকটা ভাল। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আবাসিক আবাসিক হোটেল গুলো বুকিং হওয়া শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেল, গেষ্ট হাউস ও কটেজগুলোর অর্ধেক রুম অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এতে করে অন্যান্য বছরের লোকসান কাটিয়ে উঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে জানান তিনি।
এই ঈদে দেশী পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকের সমাগমও হবে বলে আশা করছেন হোটেল ব্যবসায়ীদের এই নেতা।
জিয়া গেস্ট ইন এর স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব শফিকুর রহমান বলেন- ছোট-বড় মিলিয়ে তিনশতাধিক হোটেল-মোটেল, গেষ্ট হাউস ও কটেজ রয়েছে। এবার দেশি পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকেরও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তার মালিকানাধীন জিয়া গেষ্ট ইন ইতোমধ্যে অর্ধেকেরও বেশী রুম অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন বলে জানান।
তবে তিনি অভিযোগ করেন-হোটেল-মোটেল জোন এলাকার যেসব বস্তি ও ঝুপড়ি এলাকা রয়েছে সেখানে বিভিন্ন ধরণের মাদক বিকিকিনি হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেগুলোর বন্ধের জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান তিনি।
এ দিকে পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে হোটেল-মোটেলগুলো সংস্কার, সাগর পাড়ের কীটকট চেয়ারে রং লাগানোসহ অপরূপ সাজে সাজানো হচ্ছে দর্শনীয় পর্যটন স্পট গুলোকে। সাগরে গোসল করতে নেমে অপ্রত্যাশিত প্রাণহানি এড়াতে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। সবমিলিয়ে সাগরকন্যা কক্সবাজারে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত পর্যটন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী এ প্রতিবেদককে জানান, পর্যটক বরণে ট্যুরিস্ট পুলিশের সমন্বয়ে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। পর্যটক হয়রানী রোধ ও তাদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স কাজ করবে। পাশাপাশি থাকবে মোবাইল টীম ও সাদা পোষাকে পুলিশ।
You must be logged in to post a comment.