সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / লামায় প্রভাবশালী কর্তৃক ৯ পরিবারকে উচ্ছেদের অভিযোগ

লামায় প্রভাবশালী কর্তৃক ৯ পরিবারকে উচ্ছেদের অভিযোগ

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা :

নাম নবাব মিয়া (৬০)। বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ফোয়াং বাড়ী এলাকার বাসিন্দা। দেশ স্বাধীনের হওয়ার আগে ১৯৬০ সালের দিকে পাহাড়ে বসবাস শুরু করে। ৩ বছর বয়সে মা কোলে করে নিয়ে আসেন এই এলাকায়। সেই থেকে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ফোয়াং বাড়ী গ্রামে বসবাস। অন্যের জমিতে দিনমজুরী করে চলে ১৫ জনের সংসার। ক্রয় সূত্রে ২৮৪নং ইয়াংছা মৌজার ৫৩৯নং হোল্ডিং এর মালিক। কোন প্রকার সমস্যা ছাড়া চলছিল গরীবের সংসার। বসবাসের ৫৭ বছর পরে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি উক্ত জায়গা তার রাবার প্লটের জায়গা বলে দাবি করে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নবাব মিয়া সহ মোট ৯ পরিবারকে উচ্ছেদের জন্য চুড়ান্ত নোটিশ প্রদান করেন।

রাবার হোল্ডিং মূলে জায়গার মালিক মইন উদ্দিন খান বাদল ২৫ একরের প্লটটি সম্পূর্ণরুপে বুঝিয়া পাওয়ার জন্য ৯জনকে বিবাদী করে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ৬ মার্চ ২০১৭ইং সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানুনগো সার্ভিয়ার নিয়ে জায়গাটি রাবার প্লট মালিককে বুঝিয়ে দেয় এবং চারপাশে খুঁটি স্থাপন করে। উক্ত জায়গায় বসবাস কারীদের জায়গা ছেড়ে দিতে বলেন।

অসহায় নবাব মিয়া বলেন, আমার আর কোন জায়গা নেই। এখান থেকে তুলে দিলে আমার পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। উচ্ছেদ থেকে প্রতিকার পেতে আমরা ১৫ পরিবার ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বান্দরবান জেলা প্রশাসকের নিকট রিখিত আবেদন করেছি। একই ভাবে ফোয়াং বাড়ী গ্রামে দিনমজুর অসহায় মোঃ নুরু, কলার ঝিরি পাড়ার মোঃ কালু, খালেদু মিয়া, শামুকছড়া পাড়ার বাদশা মিয়া, মরিয়ম খাতুন, কাঠাঁলছড়া পাড়ার আনোয়ারা বেগম, মোঃ রফিক, ফাতেমা বেগম হেডম্যান রিপোর্ট মুলে উক্ত জায়গায় দখলে আছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জায়গা পরিচিহ্নিত করার সময় বলেন হেডম্যান রিপোর্টের কোন দাম নেই। জায়গা ছেড়ে দিতে হবে।

আনোয়ারা বেগম বলেন, ১ বছর আগে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী শরোয়াতলী এলাকার খান এন্টার প্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী মইন উদ্দিন খান বাদল ২৮৪ নং ইয়াংছা মৌজার ১৮৪ নং হোল্ডিং এর রাবার প্লট নং ১০৭৭, ১০৯২ মূলে ২৫ একরের একটি রাবার/হর্টিকালচার বাগানের দলিল নিয়ে আসে এবং এই ৯ পরিবারের দখলের জায়গা তার বলে দাবি করে। উক্ত প্লটটি ১৯৮১ সালে বরাদ্দ পেলেও বাগান না করায় তার প্লট চুক্তি বাতিল হয় এবং তার প্লটের চৌহদ্দি অন্যত্র ছিল। ২০১৩ সালে আবার কিভাবে যেন লীজ চুক্তি পুর্ণবহাল করে চৌহদ্দি বদল করে আমাদের দখলীয় জায়গার উপর ফেলে আমাদের উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। মইন উদ্দিন খান বাদল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ২৮৫নং ও চট্টগ্রাম ৮ আসনের সংসদ সদস্য।

স্থানীয় আব্দুল মান্নান বাহাদুর (৬০) বলেন, আমি অসহায় এই ৯ পরিবারকে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাকে চট্টগ্রাম চান্দগাঁও থানার একটি মামলায় আসামী করে হয়রাণী করছে। যে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাকেই তারা মামলা দিয়ে হয়রাণী করছে বা মামলার হুমকি প্রদান করে। পার্শ্ববর্তী জায়গার মালিক মোঃ জীবনুর রহমান মাইজভান্ডারি বলেন, আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় ফোনে আমকে অনেকবার হুমকি প্রদান করা হয়েছে।

রাবার বাগান মালিকের পক্ষে দায়িত্বরত ব্যক্তি মামুন খান জানায়, আমরা সরকারী ভাবে ২৫ একর জায়গা লীজ নিয়ে বাগান করতে এসেছি। আমরা আমাদের জায়গা দখল করছি। কাউকে উচ্ছেদ আমরা করছিনা।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে উক্ত জায়গা মইন উদ্দিন খান বাদলকে লীজ দেয়া হয়েছে তার লীজের জায়গা বুঝিয়ে দিতে আবেদন করায় আমি চিহ্নিত করে বুঝিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে অবস্থানরতরা হেডম্যান রিপোর্ট ছাড়া আর কোন কাগজ দেখাতে পারেনি।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর সংবাদকর্মী আবু হেনা সাগরের মাতা অসুস্থ : দোয়া কামনা 

  বার্তা পরিবেশক : কক্সবাজারে ঈদগাঁও উপজেলার সংবাদকর্মী এম আবুহেনা সাগরের মাতা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের ইবনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/