সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / জেলায় ঢল ও জোয়ারে ৭ লক্ষাধিক মানুষ টানা ৪দিন পানিবন্দী, খাবার সংকটে : মানবেতর অবস্থায় বানবাসী

জেলায় ঢল ও জোয়ারে ৭ লক্ষাধিক মানুষ টানা ৪দিন পানিবন্দী, খাবার সংকটে : মানবেতর অবস্থায় বানবাসী

Flood - Mukul - Chakaria  28.7.2015 -1 (2)মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া:

বৃষ্টি কমায় মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি সামান্য হ্রাস পেলেও পাহাড়ি ঢল ও সামুদ্রিক জোয়ারে কক্সবাজারের চার উপজেলার অন্তত দেড়শ গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। তিন থেকে দশ ফুট উচু পানিতে জিম্মি রয়েছে সাত লক্ষাধিক মানুষ। বানে জিম্মি পরিবারগুলো সিংহভাগ সদস্য অভুক্ত রয়েছে। সরকারী-বেসরকারী কোন সাহায্যই পৌঁছেনি মানবেতর অবস্থায় থাকা বানবাসী মানুষের কাছে। টানা চারদিনে বন্যা ও পাহাড় ধসে জেলায় ১২ জন মারা যাওয়া ছাড়াও সর্বশেষ চকরিয়ার কৈয়ারবিলে পাহাড় ধসে ৬টি বসতঘর মাটি চাপা পড়েছে। এ সময় আহত হয় ৫ জন। দরবেশকাটায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে অন্তত ২ হাজার পরিবার নতুনভাবে প্লাবিত হয়েছে।

সরজমিন ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার সদর, রামু, চকরিয়া ও পেকুয়ার দেড় শতাধিক গ্রামের পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ টানা চারদিন পানিবন্দী রয়েছে। পাহাড় ঘেষা গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও উপকূলীয় এলাকার গ্রামগুলোতে ঢলের পাশাপাশি পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট সামুদ্রিক জোয়ারের পানি বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্রবেশ করায় চরম জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে বদরখালী, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, কোণাখালী, সাহারবিল, উজানটিয়া, মগনামার মানুষরা।

এসব এলাকার মানুষ সামান্য ব্যবহার সামগ্রী হাঁস-মুরগী ও গরু-ছাগলসহ আশ্রয় নিয়েছে নিজ নিজ এলাকার উচু সড়ক ও সেতুর উপর। খোলা আকাশের নিচে নিরাপত্তা ঝুকিতে অবস্থান নেয়া এসব মানুষ খাবার ও পানীয় জলের সংকটে ভুগছে। জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার প্লাবিত এলাকার লোকজনের জন্য প্রাথমিকভাবে নগদ ২ লাখ টাকা ও ১৫০ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দিয়েছে। তবে খাদ্য গুদামের বাইরে ঢলের পানি থাকায় বরাদ্দ দেয়া চাউল উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জনপ্রতিনিধিরা জানান।

লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে পানিবন্দী হয়ে অনাহারে থাকা পরিবার সদস্যদের ঘরে ঘরে নৌকা করে গিয়ে দু’দিন ধরে খিচুড়ি বিতরণ অব্যাহত রেখেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মানিক। পৌর এলাকার ভরামুহুরীসহ প্লাবিত বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন চকরিয়া প্রেসক্লাবের দাতা সদস্য রতন কুমার সুশীল, পুলিশের পক্ষে কক্সবাজার সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো: মাসুদ আলম, উপকুলীয় এলাকায় চিড়া-গুড়সহ খাবার বিতরণ করেছেন কোণাখালীর চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম, পশ্চিম বড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাহাবউদ্দিন, বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফ, বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন চৌধুরী জিয়া, কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ উদ্দিন চৌধুরী, ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলম। অপরদিকে বন্যা পরবর্তী স্বাস্থ্য ঝুঁকি সামাল দিতে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা আলহাজ্ব আবদুস সালাম জানান।

চকরিয়ার ইউএনও মোঃ সাহেদুল ইসলাম ও পেকুয়ার ইউএনও মারুফুর রশিদ খান জানান, এখনো প্রতিটি পাড়া ও গাঁয়ের মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। অসংখ্য সড়ক ও বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। বন্যার পানি প্রবেশ করায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। জোয়ার ও ঢলের পানি নেমে যাওয়ার পর বিভিন্ন দাপ্তরিক প্রধান ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জরিপ চালিয়ে ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/