কারাগারে ঈদ কাটাবেন অর্ধশতাধিক শীর্ষস্থানীয় বিরোধী রাজনৈতিক নেতা। কয়েকজন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ সাবেক শীর্ষস্থানীয় একাধিক পেশাজীবীরও ঈদ কাটবে চার দেয়ালের মাঝে। এছাড়া সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের হাজার হাজার নেতাকর্মী ঈদ কাটাবেন কারাগারে। এবারের ঈদ নিয়ে ২ থেকে ১৬ ঈদ কাটবে কারো কারো। এদের কারও সাজা হয়েছে, কেউ রয়েছেন বিচারপ্রক্রিয়ায়। সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ অনেক ভিআইপি বন্দির ঈদ কাটবে কনডেম সেলের ছোট্ট পরিসরে। বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বেশিরভাগই রয়েছেন কাশিমপুর কারাগার, কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। ঈদের পরদিন তারা অপেক্ষায় থাকবেন কবে সাক্ষাৎ করতে যাবেন তাদের পরিবারপরিজন ও স্বজনরা।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, সাংবাদিক কনক সরোয়ার, বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেত্রী ও সাবেক এমপি সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, বিএনপি দলীয় সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি ও পৌর মেয়র জি কে গউছ, চট্টগ্রাম নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, চাঁদপুর জেলা বিএনপি সভাপতি ও ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকসহ জেলা পর্যায়ের কয়েক শ’ নেতা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
ওয়ান ইলেভেনের পরবর্তী সরকারের সময় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। সেই থেকে কারাগারেই কেটেছে তার ১৮টি ঈদ।
জামিন না পাওয়ায় এবারও জেলেই ঈদ কাটবে তার। এছাড়া ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, এনএসআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা উইং কমান্ডার শাহাবুদ্দিন, উপ-পরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত, এনএসআইয়ের ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন খান, সিইউএফএলের সাবেক এমডি মহসিন তালুকদার, সাবেক মহাপরিচালক এনামুল হকের বিরুদ্ধে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মৃত্যুদন্ডসহ নানা মেয়াদে সাজা হওয়ায় তাদেরও ঈদ কাটবে কারাগারের কনডেম সেলে।
জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের মধ্যে দলটির আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহান, নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী দীর্ঘদিন ধরেই কারাবন্দি। জামায়াতের কারান্তরীণ নেতাদের মধ্যে কয়েকজন দীর্ঘ ৭ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ইতিমধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। এছাড়া সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, চট্টগ্রাম মহানগরী আমির ও সাবেক এমপি শামসুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ উপজেলা পর্যায়ের হাজারও জামায়াত নেতা বন্দি দিন কাটাচ্ছেন জেলে।
কারাগারে দ্বাদশ বারের মতো ঈদ করবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। তিনি বর্তমানে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে আটক আছেন। প্রথমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রয়েছেন কাশিমপুর-১ কারাগারে।
২০১০ সালের ২৯ জুন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মাওলানা সাঈদীকে গ্রেফতার করে। কারান্তরীণ অবস্থায়ই তিনি প্রিয় মা এবং বড় ছেলে মাওলানা রাফিক বিন সাঈদীকে হারিয়েছেন।
-শীর্ষনিউজডটকম,ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.