সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / শুক্রবার কক্সবাজার সৈকতে বসবে প্রতিমা : বিসর্জনে লাখো মানুষের মিলনমেলা

শুক্রবার কক্সবাজার সৈকতে বসবে প্রতিমা : বিসর্জনে লাখো মানুষের মিলনমেলা

Sea Beach (6)অজিত কুমার দাশ হিমু, কক্সভিউ:

শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ মিলনমেলা বসবে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। ২৩ অক্টোবর শুক্রবার কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে একসঙ্গে দু’শতাধিক প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে লাখো মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হবে মটাই প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে দুপুর আড়াইটা থেকে কক্সবাজার জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে, সংগীতের মুর্ছনায় নেচে-গেয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিমা নিয়ে উপস্থিত হবেন সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে। একই সঙ্গে আসা ভক্ত, পূজার্থী, দর্শণার্থী ছাড়াও দেশ-বিদেশের বিপুল সংখ্যক পর্যটক ও সকল ধর্মের মানুষ বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনে শামিল হবেন।

উত্তরপ্রান্তে ডায়াবেটিস হাসপাতাল ও দক্ষিণে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত সৈকতের তিন কিলোমিটার বেলাভূমি জুড়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এবারের বিসর্জনে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে। এরই মধ্যে সময় সমাপনী অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।

সৈকতের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে এ বিসর্জনোত্তর সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন যোগাযোগ মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের এবং কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, খোরশেদ আরা হক এমপি, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ রুহুল আমিন, পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথসহ রাজনৈতিক ও সামজিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানান জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা।

তিনি আরও জানান, সকল সম্প্রদায়ের সকল বয়সের নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ বনিতার বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হবে এ প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানটি। দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটকও উপভোগ করবেন প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান। সূর্যাস্তের আগে সমুদ্র সৈকতের মুক্তমঞ্চে গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনোত্তর অনুষ্ঠান শুরু হবে। এ সমাপনী অনুষ্ঠানের পর ধারাবাহিকভাবে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রনজিত দাশ বলেন, সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে কক্সবাজারের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার প্রত্যয় ঘোষণা করা হবে এখানে। এ অনুষ্ঠানে সব ধর্মে মানুষের শামিল হওয়ার আহবানও জানান তিনি। শেষে আরতী, ঢোলক বাদ্যির তালে তালে মা দুর্গা কি জয় এই শ্লোগানে মুখরিত থাকবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।

কক্সবাজার জেলা কেন্দ্রীয় স্বরস্বতিবাড়ীর পৌরহিত স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, স্বর্গলোকের কৈলাশ শৃঙ্গ থেকে জগজ্জননী দুর্গা মর্ত্যে আসেন তার সন্তানদের অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য। তাই পৃথিবীর মানব সন্তানেরা প্রতি বছর অপেক্ষায় থাকে দুর্গার জন্য।

হিন্দু শাস্ত্র মতে, দশভূজা দেবী দুর্গা শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতি শরতে কৈলাস ছেড়ে কন্যারূপে মর্তলোকে আসেন। সঙ্গে আসেন তার দুই মেয়ে লক্ষ্মী, সরস্বতী আর দুই ছেলে গণেশ ও কার্তিক।

হিন্দু পঞ্জিকা মতে, এবার দেবী এসেছেন অর্শ্বে (ঘোড়া), যাবেন গজে (হাতি)।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে, দেবী অর্শ্বে (ঘোড়া) আসা মানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বার্তা দেয় আর গজে (হাতি) গেলে পৃথিবী হয় সুজলা-সুফলা শষ্য-শ্যামলা হয়।

কক্সবাজারস্থ রাম কৃষ্ণ মিশনের পৌরহিত পন্ডিত শ্রী বিজয় কৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, “মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি যেমন কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মুলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।”

পুরো এলাকায় আইন প্রয়োগকারি সংস্থার লোকজন তৎপর থাকবে বলে জানান পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ।

একই সময় কক্সবাজারের চকরিয়ার মাতামুহুরী, রামুর বাঁকখালী, টেকনাফর সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত ও রেজুনদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/