নিজস্ব প্রতিনিধি, কুতুবদিয়া:
বুধবার দিবাগত রাতে বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে ডাকাতির শিকার হয়েছেন ১০টি ফিশিং ট্রলার। সূত্রে জানা যায়, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের আব্বাস কোম্পানীর মালিকানাধীন এফ.বি আল্লাহর দান, বড়ঘোপ ইউনিয়নের মোঃ আলমের মালিকানাধীন এফ.বি আল্লাহর দান, হান্নানের মালিকানাধীন এফ.বি আল্লাহর দান,মীর কাশেমের মালিকানাধীন এফ.বি কাসেমসহ ১০ টি ফিশিং ট্রলার বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরারত অবস্থায় জলদস্যুদের কবলে পড়ে ডাকাতির শিকার হয়। এ সময় জলদস্যুরা ফিশিং বোটগুলোর আহরিত মাছ, মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এবং ৩টি ফিশিং ট্রলার মুক্তিপণ দাবীর উদ্দেশ্যে মাঝি মাল্লাদের অন্য ফিশিং ট্রলারে নামিয়ে দিয়ে কক্সবাজারের পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীতে নিয়ে যায়।
বুধবার দুপুর ১২টার সময় ফিশিং বোটের মাঝির লুটকরা মোবাইল থেকে বোট মালিক আবব্বাস কোম্পানীর মোবাইলে ফোন করে প্রথমে ২ লাখ টাকা পরে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। বোট মালিক জলদস্যুদের ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার কথা বলেন। বোট মালিক কৌশল অবলম্বন করে কুতুবদিয়া থানা পুলিশকে অবগত করেন। কুতুবদিয়া থানার এস আই ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সিভিল পোশাকে মুক্তিপন দাবী করা জলদস্যুর ব্যবহারিত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে মুক্তিপণের টাকা জলদস্যুদের বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে ধূরুং বাজার এলাকায় যায়। মুক্তিপণের টাকা নিতে আসা জলদস্যু বাদশা মাঝি (৩৮) কে হাতে নাতে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। সে লেমশীখালী ইউনিয়নের সতর উদ্দিন এলাকার জহুরুল আলমের পুত্র বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে আব্বাস কোম্পানী জানায়, গত রাতে আমার ফিশিং ট্রলার সাগরে মাছধরারত অবস্থায় জলদস্যুরা মাঝি-মাল্লাহদের অন্য বোটে নামিয়ে দিয়ে মালামালসহ নিয়ে যায়। বুধবার দুপুর ১২টার সময় জলদস্যুরা মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ দাবী করলে থানা পুলিশকে অবগত করলে কুতুবদিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে জলদস্যুকে আটক করে। বোট মালিক হান্নান জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গভীর সাগরে মাছ ধরারত অবস্থায় তার মালিকানাধীন এফ.বি আল্লাহর দান ফিশিং ট্রলারে জলসদ্যুরা হামলা চালিয়ে বোটের মাঝি-মাল্লাদের মারধর করে বোটে আহরিত মাছ, মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। অপর বোট মালিক মোঃ আলম জানায়, ৩/৪ দিন পূর্বে তার মালিকানাধীন এফ.বি আল্লাহর দান ফিশিং ট্রলার গভীর সাগরে মাছ ধরার জন্য যায়। রাতে একদল জলদস্যু বোটে হানা দিয়ে মাঝি-মাল্লাহদের মারধর করে অন্য বোটে তুলে দিয়ে মালামালসহ বোটটি নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া থানায় এস আই ওয়াহিদুজ্জামান জানায়, বাদশা মাঝি এলাকার দূর্ধর্ষ ডাকাত,তার বিরুদ্ধে থানায় ৮/১০টি মামলা রয়েছে। ফিশিং বোট ডাকাতি করে মুক্তিপণ দাবী করার সময় তাকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে মহেশখালী উপজেলা থেকে আব্বাস কোম্পানীর এফ.বি আল্লাহর দান ও মোঃ আলমের এফ.বি আল্লাহর দান নামক ফিশিং ট্রলার উদ্ধার করা হয়। তার সকল সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যে ঐ জলদস্যু গ্রুপের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার করতে পারবো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রলার মাঝি জানায়, গভীর সাগরে জলদস্যুতা কাজে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে বাঁশখালীর রবি,আনছার, রাজাখালীর বাইশ্যা, মহেশখালীর আনজু সিকদার বাহিনীর প্রধান সিকদার, কুতুবদিয়ার আজিজ, দিদার ডাকাতরা দস্যুতাকাজে সক্রিয় রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সাড়াশি অভিযানে একাদিক দস্যু সর্দারকে গ্রেফতার করার কয়েক মাস সাগর নিরাপদ থাকলেও বর্তমানে আবারও সাগরে জেলেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে।
You must be logged in to post a comment.