সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / ঈদগাঁওকে উপজেলা কিংবা পৌরসভা ঘোষণার দাবী

ঈদগাঁওকে উপজেলা কিংবা পৌরসভা ঘোষণার দাবী

এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :

সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী ও ঐতিহ্যের ধারক বাহক ঈদগাহ জনপদ। প্রাচীনকাল থেকে এ জনপদ সম্পদ ও প্রাচুর্য্যের পরিচয় বহন করে আসছে। ভৌগোলিক অবস্থান, আর্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, শিক্ষা সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক অগ্রসরতা বিবেচনায় ঈদগাহ জেলার সর্বাধিক জনগুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ফুলেশ্বরী নদীর অববাহিকা জুড়ে গড়ে উঠে এ জনপদের জীবন ও জীবিকার লড়াই। সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারাবাহিকতায় ও প্রয়োজনের তাগিদে নদী নির্ভর বাণিজ্য প্রসারে ফুলেশ্বরী তীরের ঈদগাহতেই বিস্তৃত হয় গ্রামীণ হাট। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আবাসন ও বাণিজ্য প্রসারতা।

নাগরিক চাহিদার যোগান ও তাগিদ মেঠাতে হু হু করে বাড়ছে অবকাঠামো। যার পুরোটাই অপরিকল্পিত ও অপরিণামদর্শী। ফলশ্রুতিতে সময়ের ব্যবস্থানুপাতিক হারে বাড়ছে নাগরিক দুর্ভোগ, সৃষ্টি হচ্ছে নিত্য নতুন সমস্যা সংকট ও জটিলতার চক্র। এখনই সময় ঈদগাহকে পৌর শহরে রূপান্তরের মাধ্যমে মর্যাদা সম্পন্ন বাসযোগ্য ঠিকানা গড়ে নাগরিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে দীপ্ত শপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। নাগরিক মর্যাদা ও নাগরিক সেবা পাওয়া সকলের সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার। এ অধিকার আদায় ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য বসতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা সদরের বৃহৎ বাণিজ্যিক এলাকা ঈদগাহকে শহর এলাকা ঘোষণা করে পৌরসভা কিংবা উপজেলায় রূপান্তরের মাধ্যমে একটি পরিকল্পিত আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পরিবর্তনের দীপ্ত শপথে এগিয়ে আসতে হবে।

এদিকে ঈদগাঁও বাজার ও আশপাশের এলাকায় বিরাজমান নানাবিদ সমস্যা সংকট নিরসনকল্পে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য ঈদগাহকে পৌরসভা বা উপজেলায় রূপান্তরের মাধ্যমে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, নাগরিক পরিসেবা বৃদ্ধি ও ঈদগাহকে পরিকল্পিত শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আগামী প্রজন্মের জন্য লাগসই বাসস্থান, শারীরিক ও মানসিকতা বিকাশের পরিবেশ সৃষ্টি করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন সচেতন মহল। নাগরিক সেবা বৃদ্ধি ও বিরাজমান সমস্যা নিরসনে প্রয়োজন যথাযথ কর্তৃপক্ষ। যে কারণে হয় পৌরসভা নয় উপজেলা গঠন ব্যতিরেখে চলমান সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

জেলা শহর থেকে বত্রিশ কিলোমিটার উত্তরে চকরিয়া পৌর শহর, বত্রিশ কিলোমিটার দক্ষিণে ঈদগাঁও বাজারের অবস্থান। ভৌগোলিক অবস্থান, বাণিজ্যিক, নাগরিক গুরুত্ব বিবেচনা করে ঈদগাহ যে কোন একটি দাবীদার।

অন্যদিকে আদি পুরুষদের প্রবাদ বচন ধীরে ধীরে সত্য রুপে প্রমাণিত হচ্ছে। অ-পথ-পথ, অ-ঘাট-ঘাট, অ-মানুষ-মানুষ হচ্ছে। শেওলা ভাসা জলাশয়ে স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে নয়নাবিরাম দালান ঘর। দূর্গম পাহাড়ী ঢল বেয়ে যৌবনের ঢেউ নিয়ে দূর থেকে দূরে চলে গেছে কাল পিচ ঢালা রাস্তা। ফলে উন্নত হয়েছে যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থা। আবার পাহাড়ী ঢলে ভেস্তে যাওয়া অনেক অযোগ্য ইউনিয়ন যোগ্যতার সন্ধান পেয়ে উপজেলা কিংবা পৌরসভায় উন্নতি হয়েছে। সেসব এলাকার নতুন নতুন স্থাপত্যে টিকরে পড়েছে চোঁখ বাধানো সৌন্দর্য্যরে। অথচ এতকিছুর মাঝে ও চির অবজ্ঞায় পতিত আছে, ঈদগাঁও নামক অবহেলিত জনপদটি। এমনকি উন্নয়নের ছোঁয়া খুঁজে পায়নি এ এলাকাটি। বলতে গেলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার খ্যাত বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত বৃহত্তর ঈদগাঁও বাজার। এই বাজারটি একটি বহুমুখী বাণিজ্য কেন্দ্র।

এই ঈদগাঁও বাজারে পশ্চিমের মহেশখালীর লোকজন চৌফলদন্ডী হয়ে প্রতিদিন না হলেও অন্ততঃ প্রতি শনি-মঙ্গলবার তথা (বাজার বার বা হাট বার) নানান প্রকার পন্য সামগ্রী ক্রয়/বিক্রয়ের লক্ষ্যে ছুটে আসে। গজালিয়া, বাইশারী, ঈদগড়, ঈদগাঁও, এবং নাইক্ষ্যংছড়ির লোকজনও বিভিন্ন পণ্য ক্রয়/বিক্রয়ের জন্য এই বাজারে অন্তত ২ বার আসে। উত্তরে ডুলহাজারা, খুটাখালী, ইসলামপুর ও দক্ষিণে রামু, রশিদনগর, জোয়ারিয়ানালার লোকজনকেও নিয়মিত বাজারে যাতায়াত করতে দেখা যায়। আর বৃহত্তর এলাকার আশপাশের লোকজন তো প্রতিদিন লেগেই আছে।

সব মিলিয়ে হিসাব করলে দেখা যায় যে, সপ্তাহে দুইদিন ঈদগাঁও বাজারে কম পক্ষে ৩/৪ লাখেরও বেশি লোক নিয়মিত ভাবে ব্যবসার লক্ষে যাতায়াত করে থাকে। যার কারণে গোটা দক্ষিণ চট্টগ্রামের এই ঈদগাঁও বাজারটি পরিণত হয়েছে একটি জনবহুল ও ব্যস্ততম বাজার হিসেবে। অথচ এই বাজার থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা মুনাফা অর্জন করেছে সরকার। কিন্তু বাজারের চিত্র ধারণ করলে বুঝা যায় যে, এটা যে বর্তমান উন্নত ব্যবস্থার চিন্ত-ভাবনা থেকে কতটুকু পিছিয়ে আছে। তা অতি সহজে অনুমান করা যায়। স্বাধীন হয়েছে পৌরসভা কিংবা  উপজেলার কাঙ্খিত সেই স্বাদ খুজে পায়নি এখনো ঈদগাঁওবাসী।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

দৈনিক যুগান্তরের কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিম উদ্দিনের পিতার মৃত্যু : বিভিন্ন মহলের শোক

  নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : দৈনিক যুগান্তরের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি জসিম উদ্দিনের পিতা হাজী নূর ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/