যে বয়সে বই নিয়ে শিশুরা স্কুলে যাওয়া কথা, শিশু সহপাঠীদের সাথে খেলাধুলায় মত্ত থেকে দিন কাটিয়ে দেওয়ার চিরাচরিত নিয়ম রয়েছে, সেই বয়সেই শিশুর পানি ও তেলপরা নিতে শত শত লোকের ভিড় জমছে। অনেকেই তার প্রদত্ত তেল ও পানিপরা সেবন করে আরোগ্য হওয়ার ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অজপাড়া গাঁয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসা নারী, পুরুষ, শিশু সহ আবাল বৃদ্ধ বনিতা ওই শিশুর বাড়িতে গিয়ে ভিড় করছে। ভিড় সামলাতে গ্রামের যুবকেরা সেখানে হিমশিম খাচ্ছে। বাড়ির আনাচে কানাচে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য দোকান পাটে পানির বোতল, তেল সহ অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিন কোটবাজার ভালুকিয়া হয়ে পূর্ব দিকে প্রায় ৮ কিলোমিটার অদূরে তুলাতলী পূর্বকুল এলাকায় গিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এ গ্রামের আলী হোছনের ৪ বছরের শিশুপুত্র মোহাম্মদ রাজ্জাক উদ্দিন একটি চেয়ারে বসে আগত দর্শনার্থীদের রোগ নিরাময়ের জন্য পানি ও তেলপরা দিচ্ছে। জানতে চাওয়া হলে তার বাবা আলী হোছন জানান, শিশু অলৌকিকভাবে গত এক মাস ধরে তেল, পিয়াজ, কাছিম পরা দিচ্ছে। এ বাবদ সে কোন টাকা পয়সা নিচ্ছে না। তবে কেউ দয়া করে জোর পূর্বক টাকা পয়সা দিলে সে গ্রহণ করে স্থানীয় গরিব মিসকিনদের সাহায্য করছে। রাজশাহী থেকে আসা নিশিদা বেগম জানান, সে পেটের পিড়ায় আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঔষুধ খেয়েছেন লাখ লাখ টাকার। তাও তার অসুখ ভাল হয়নি। লোকমুখে খবর পেয়ে শিশু ফকিরের বাড়িতে এসে তার পানিপরা খেয়ে আমি অনেকটা সুস্থবোধ করছি। তাই আবারো এসেছি শিশু ফকিরকে কিছু টাকা দেব এবং তার কাছ থেকে কিছু তেল ও পানিপরা দেশের বাড়িতে নিয়ে যাব।
এ সময় সোনারপাড়া নিদানিয়া গ্রামের বয়োবৃদ্ধ আলী হোছন জানান, তিনি চোখে ঝাপসা দেখে আসছিলেন দীর্ঘ দিন থেকে। শিশু ফকিরের তেলপরা চোখে মেখে সে এখন ভাল দেখতে পাচ্ছেন। এভাবে বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী রোগী শিশু ফকিরের গুণগান করতে দেখা গেছে। শিশু পিতা আলী হোছন জানান, তার শিশুর পানি ও তেলপরা নিয়ে আরোগ্য হওয়া রোগীদের দান করা অর্থ দিয়ে স্থানীয়ভাবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সাহায্য করার মনমানসিকতা রয়েছে।
রত্নাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী জানান, শিশু ফকিরের পানি ও তেলপরা নিতে প্রতিনিয়ত অসংখ্য লোকজন আসা-যাওয়া করতে জানা গেছে।
You must be logged in to post a comment.