‘বাবাকে চরিত্র ভালো করতে বলো, নচেৎ আমি আত্মহত্যা করবো’ বলায় ঘটনা ফাঁস
মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
ধর্মীয় প্রবাদ আছে- ‘পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম, পিতাহী পরমংতপ’ (অর্থাৎ পিতাকে ধর্মজ্ঞানে, স্বর্গ এবং সবকিছুর মুল বলে জানে সন্তান)। সেজন্য পিতাকে দেবতা জ্ঞানে পুজে সন্তানরা। আর সেই দেবতাই যদি সন্তানের ব্রতে আঘাত হানে তার চেয়ে জঘণ্য আর কিছু হতে পারেনা। পৃথিবীতে মেয়ের কাছে বাবা, বাবার কাছে মেয়ের ভালবাসার পরিমাণ থাকে অত্যধিক। মেয়েরা বাবাকে মনে করে রক্ষা কবজ। সেই রক্ষা কবজে যদি ফাটল ধরে তাকে আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগকেও হার মানায় বলে বয়োবৃদ্ধদের অভিমত। তেমনি একটি জগণ্য ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়ার উপকূলীয় ইউনিয়ন ঢেমুশিয়ার খাসপাড়া গ্রামে। এঘটনায় মেয়ের মা বাদি হয়ে স্বামীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ অভিযোক্ত পশুতুল্য পিতা আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করে।
মামালার বাদি এজাহারে দাবি করেন, জন্মদাতা কর্তৃক দু’দফায় জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হয়েও প্রথমে নিজের ও পারিবারিক সম্মান বিঘ্নের আশংকায় মুখ খুলছিলোনা ৭ম শ্রেনী পড়ুয়া ১২ বছরের শিশু মেয়ে। একপর্যায়ে ভবিষ্যতে এমন আরো ঘটনা ঘটতে পারে শংকায় মাকে বলে ‘বাবাকে চরিত্র ভালো করতে বলো, নচেৎ আমি আত্মহত্যা করবো’। একথা শোনে মায়ের মনে সন্দেহ জাগে। গত ১১ জুলাই বিস্তারিত জিজ্ঞেস করলে কান্না জড়িত কণ্ঠে মেয়ে বলে গত ৩ জুলাই রাত ৯টায় ঘরের অন্যরা বেড়াতে গেলে এবং ৫ জুলাই সকালে আমি (বাদি) এনজিও’র ঋণ দিতে গেলে দু’দফা আমার স্বামী মেয়ের সাথে খারাপ কাজ করেছে। একথা শোনে মা তার স্বামীকে কোন কিছু বলতে গেলেই হুমকির শিকার হয়। ফলে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালে তারা বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পশুতুল্য বাবা আবুল কালাম (৪৫)কে আটক করে।
চকরিয়া থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসির আরাফাত বলেন, জঘন্য ঘটনাটির ব্যাপারে ভিকটিমের মা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আবুল কালাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছে ‘তার মাথায় শয়তান ঢুকেছিলো, তাই অপকর্ম করেছে’। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.