মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
পর্যটন জেলা কক্সবাজারে জাল টাকার ছড়াছড়ি চলছে। উপকুলীয় এলাকায় গবাদি পশু বিকিকিনি ছাড়াও জেলা ও উপজেলা শহর কেন্দ্রিক বিপনী কেন্দ্রে জাল টাকার লেনদেন হচ্ছে হরহামেশা। এতে ব্যবসায়ীরা ভুগছে জাল টাকা আতংকে। আইনী জটিলতার কারণে জাল টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছে অনেকেই। জাল টাকা লেনদেন হওয়ার সাথে সাথে টাকাসহ জাল টাকা বাজারজাতকরণকারী ২৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয় ১৪ মাসে। এসময়ে মোটা অংকের জাল টাকার লেনদেন হয় চকরিয়ার ইলিশিয়া বাজারে তিনটি গরু ক্রয়ের বিপরীতে।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে এক হাজার মূল্যমানের ৪১টি (৪১ হাজার) জাল টাকার নোটসহ গ্রেপ্তার করা হয় মো.দেলোয়ার হোসেন (২৮) নামের এক যুবককে।
কক্সবাজারের থানার এসআই মাহাবুবুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত জাল নোট ব্যবসায়ী মো.দেলোয়ার হোসেন কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের মুহুরী পাড়া এলাকার মোহাম্মদ হাসানের ছেলে।
চকরিয়া থানার এসআই মাহাবুবুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দেলোয়ার হোসেন স্থানীয় এক দোকানদারের কাছ থেকে ভাংতি নিতে একটি এক হাজার টাকার নোট দেন। ব্যবসায়ী ওই টাকা জাল দাবী করলে আরো একটি নোট দিলে তাও জাল দেখে সন্দেহ হয়। ফলে কৌশলে তাকে অপেক্ষায় রেখে পুলিশে খবর দেয়। এ খবর পেয়ে ফোর্স নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করি। এসময় তার দেহ তল্লাশি চালিয়ে ৪১টি এক হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোট উদ্ধার করি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই মাস পূর্বে ইলিশিয়া বাজারে তিনটি গরু ক্রয়ের বিপরীতে ১ লাখ ২১ হাজার টাকা লেনদেন হয়। গরু বিক্রেতা ঘরে গিয়ে দেখেন সব টাকাই জাল। পরে ওই জাল টাকা নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ মীমাংসা বৈঠক করেও সুরাহা না পাওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হতে হয়। পুলিশি সহায়তায় একটি গরু ও ২টি গরুর টাকা আদায় করা হয় ওই জাল টাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।
চকরিয়া পৌরশহরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বেচাকেনার চাপের মধ্যে অনেকেই জাল টাকা দিয়ে যায়। ওই টাকা নিয়ে তারা আইনের আশ্রয়ও নিতে পারেনা না প্রতারক চক্র অপরিচিত ও উল্টো হয়রানী হওয়ার ভয়ে। একইভাবে জাল টাকা লেনদেন হচ্ছে পর্যটন এলাকা কক্সবাজার শহরসহ জেলার আটটি উপজেলায়। পুলিশ মাঝেমধ্যে জালটাকাসহ তৃণমুল পর্যায়ের হাতেগোনা কয়েকজনকে আটক পূর্বক মামলা করলেও জাল টাকার উৎস ও নেপথ্য গডফাদারদের সনাক্ত করণে উদ্দ্যোগ না নেয়ায় জাল টাকা লেনদেন বন্ধ হচ্ছেনা। তদুপরি আসল ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে জাল একলাখ টাকা পাওয়ায় এই প্রতারণামূলক অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে তরুণ যুবকরাও।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো.কামরুল আজম বলেন, জাল নোটসহ গ্রেপ্তার হওয়া দেলোয়ারের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। চকরিয়ায় জাল নোট প্রতারক চক্রের সন্ধান দিলেই পুলিশ সাথে সাথে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
You must be logged in to post a comment.