সীমান্তে অপরাধীর উপস্থিতি সনাক্ত ও ইউরিন থেকে সার উৎপাদন প্রক্রিয়া
মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
বাংলাদেশ নিম্নমধ্য আয়ের দেশে উন্নিত হলেও জনসংখ্যা বৃদ্ধি থেমে নেই। যেহারে জনসংখ্যা বাড়ছে দেখা দিতে পারে আবাসন সমস্যা। সংকট হতে পারে কৃষি জমির। তাই আগে-ভাগেই সতর্ক হতে হবে। বিশাল সাগর থেকে জমি পুনরুদ্ধার করে আবাসন ও কৃষি জমি সমস্যার সমাধান করতে হবে। তারই একটি নমুনা প্রদর্শন করলেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা ডুলাহাজারা ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আবদুল্লাহ আল মনির। তাকে সহায়তা করেন একই বিভাগের মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের দুইদিন ব্যাপী মেলায় প্রদর্শন করা হয় ব্যতিক্রমি নমুনাটি। তাদের দুটি প্রজেক্টের মধ্যে অপরটিও গুরুত্ব বহণ করে। তাতে দেখানো হয়েছে একপাশে মায়ানমার ও অপর পাশে বাংলাদেশ। মাঝখানে অভয়ারণ্য ও সাগরের নানা ডেরায় আত্মগোপনে থাকা অপরাধীদের উপস্থিতি সনাক্তকরণ। এই তরুণ ছাত্রদের দুটি প্রজেক্ট বাস্তবে রুপ পেলে আবাসন ও কৃষি সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সীমান্ত এলাকার অপরাধ প্রবনতা কমে আসবে।
এই মেলায় ৩৪টি স্টলের মধ্যে হযরত ফাতেমা (রা:) বালিকা আলিম মাদ্রাসার প্রজেক্টটিও নজর কাড়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সুধীজনের। মাদ্রাসার ৫ ছাত্রী প্রদর্শন করেন ইউরিন থেকে ইউরিয়া সার প্রস্তুতির বিষয়ে প্রজেক্ট।
তাদের দলনেতা মোকাররমা সুলতানা জেনি বলেন, দেশে সার সংকট না থাকলেও নিন্মমধ্য আয়ের দেশকে উচ্চবিত্তদের দেশে পরিণত করতে কৃষি ক্ষেত্রে আরো স্বাবলম্বী হতে হবে। তাই ফসলের অন্যতম উপাদান ইউরিয়া নিয়ে প্রজেক্ট প্রদর্শন করেছি। আমাদের প্রজেক্টের আইডিয়া অনুসরণ করলে কারখানায় সার উৎপাদনে আরো সাশ্রয় হবে।
চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো.দিদারুল আলম বলেন, উপজেলা প্রশাসন, টিআইবি ও সনাকের যৌথ আয়োজনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তায় শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহার নিয়ে দুইদিন ব্যাপী উপস্থিত বক্তৃতা ও প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে জানা-অজানা নানা বিষয়ের আলোকে প্রজেক্ট নিয়ে স্টল দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- চকরিয়া সরকারী কলেজ, ডুলাহাজারা ডিগ্রী কলেজ, চকরিয়া (আবাসিক) মহিলা কলেজ, বদরখালী ডিগ্রী কলেজ, মেমোরিয়াল খ্রীস্টান উচ্চ বিদ্যালয়, হারবাং ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, খুটাখালী উচ্চ বিদ্যালয়, বদরখালী কলোনিজেশন উচ্চ বিদ্যালয়, কিশলয় আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আল-আজাহার উচ্চ বিদ্যালয়, সাহারবিল এমএস উচ্চ বিদ্যালয়, চকরিয়া আনোয়ারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা, কাকারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আর কে নুরুল আমিন চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, মানিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দরবেশকাটা উচ্চ বিদ্যালয়, ইলিশিয়া জমিলা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়, অনুশীলন একাডেমী, ঢেমুশিয়া জিন্নাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়, জিএনএ মিশনারী উচ্চ বিদ্যালয়, বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয়, পহরচাঁদা উচ্চ বিদ্যালয়, চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়, চকরিয়া সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হযরত ফাতেমা (রা:) বালিকা আলিম মাদ্রাসা, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ, বহাদ্দরকাটা উচ্চ বিদ্যালয়, চকরিয়া গ্রামার স্কুল, পহরচাঁদা ফাজিল মাদ্রাসা, কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন, ভেওলা মানিকচর উচ্চ বিদ্যালয়, কৈয়ারবিল উচ্চ বিদ্যালয়, দিগরপানখালী উচ্চ বিদ্যালয়, রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ ও অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি ও সুধীমহলের সার্বিক সহায়তায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তায় দুদিন ব্যাপী মেলা সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার আয়োজিত মেলায় মফস্বল উপজেলার গ্রামীণ জনপদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নানা ক্ষেত্রে সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে বিভিন্ন প্রজেক্ট উপস্থাপনের মাধ্যমে নিজেদের লুকানো মেধা যেভাবে বিকাশ ঘটিয়েছে তা অব্যাহত থাকলেও চকরিয়া থেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার মতো নেতৃত্ব উঠে আসবে।
You must be logged in to post a comment.