পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত চকরিয়া-পেকুয়ায়
মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
টানা দুই দিনের বর্ষণে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে আছে বান্দরবানের লামা ও আলিকদম উপজেলা। সোমবার দুপুর থেকে লামা-আলিকদম বাজারে পানি উঠে।
চকরিয়া-পেকুয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের বসতিতে ঢলের পানি প্রবেশ করতে শুরু করে সন্ধ্যা থেকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মাতামুহুরী নদীর চিরিঙ্গা ব্রীজ পয়েন্টে ঢলের পানি বিপদ সীমার চার ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ঢলের পাশাপাশি টানা বিদ্যুৎ না থাকায় জনদূর্ভোগ চরমে পৌছেছে। পিডিবির বিদ্যুৎ মাঝে মধ্যে আসলেও পল্লী বিদ্যুৎ নেই ১৪ দিন ধরে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানি মাতামুহুরী নদীর দু’কূল উপচিয়ে চকরিয়ার বসতিতে প্রবেশ করতে শুরু করে সন্ধ্যা থেকে। চিরিঙ্গা মানিকপুর সড়কের কাকারার দুটি অংশের উপর দিয়ে ঢলের পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। বিভিন্ন ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ বেশিরভাগ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
কাকারা ইউপি চেয়ারম্যান শওকত ওসমান, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম, ফাঁশিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা কাইছার, কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মক্কি ইকবাল হোসেন, হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম, বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন সিকদার অভিন্ন বক্তব্যে বলেন, সন্ধ্যা থেকে তাদের ইউনিয়নের বসতী এলাকায় পাহাড়ী ঢলের পানি প্রবেশ করে। এসব ইউনিয়নের কয়েকশত ঘরে রাত ৯টার মধ্যেই পানি প্রবেশ করে। গ্রামীণ সড়কের দুই তিন ফুট উপর দিয়ে ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জনপ্রতিনিধিরা জানায়, সদ্য রোপিত আমন ধান ছাড়াও সবজী ক্ষেত পানির নীচে তলিয়ে গেছে।
অপরদিকে পেকুয়ায় সামুদ্রিক জোয়ারের ধাক্কায় বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে সুতাচোরা, নুরী বাজার, রুপালী বাজার, টান্ডারপাড়া সহ ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়াত আজিজ রাজু ও স্থাণীয় সাংবাদিক ইমরান হোসাইন নিশ্চিত করেছেন।
সামুদ্রিক জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে চকরিয়ার বরইতলীর পহরচাঁদার আশপাশের গ্রামগুলোতে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ী ঢল ও সামুদ্রিক জোয়ারের পানিতে কোনকোন স্থানে ক্ষতি ও প্লাবিত হচ্ছে তা সার্বক্ষণিক খোঁজ নিচ্ছি। সমস্যা অধিক হলে আমি নিজেই ছুটে যাচ্ছি। ঢলে পানি বাড়তে থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনের আশ্রয়ের সুবিধার্থে শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলো খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই প্রতিষ্টানে আশ্রয় নেয়া লোকজনের জন্য খাদ্য প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
You must be logged in to post a comment.