গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ উপকূল দিয়ে এখনো ইয়াবা পাচার অব্যাহত রেখেছে রোহিঙ্গারা। সীমান্তে এত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ পরও ইয়াবা কারবারিরা নিত্যনতুন কৌশলে মিয়ানমার থেকে দেশে নিয়ে আসছে ইয়াবা। ইয়াবা কারবারীরা এবার রোহিঙ্গাদের পেট ভাড়া করেই তাদের এই অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পেটের ভিতর করে একবার ইয়াবার চালান আনতে পারলে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা পায় তারা। সেই ধারাবাহিকতার সুত্র ধরে ২৯ মার্চ শুক্রবার ইয়াবা পাচারে জড়িত রোহিঙ্গাদের একটি দল টেকনাফ নাফনদী সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমার থেকে পেটের ভিতর অভিনব কায়দায় বিপুল পরিমান ইয়াবা একটি চালান নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করছে। সেই গোপন তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা ১৮জন মাদক বহনকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়। এরপর আটককৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৩ রোহিঙ্গার পেটে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা ইয়াবা গুলো উদ্ধার করার জন্য ২৯ মার্চ সন্ধা থেকে শুক্রবার সারা রাত পর্যন্ত আমাদের সদস্যরা তাদের প্রত্যেক জনের পেটের ভিতর থেকে পর্যায় ক্রমে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে ইয়াবা আনা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্যরা শুক্রবার সকালে নাফনদীর তীরে অবস্থান নেয়। এরপর হ্নীলা ইউনিয়ন চৌধুরীপাড়া নাফনদীর তীরে একটি ঘরে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্যরা মাদক পাচারে জড়িত ১৮ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
তারা সবাই শুক্রবার ভোরে মিয়ানমার থেকে নৌকাযোগে এপারে এসে একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আরও বলেন, টেকনাফ সীমান্ত পথ ব্যবহার করে ইয়াবা পাচারকালে এ পর্যন্ত ১০ জন রোহিঙ্গাসহ প্রায় এক শতাধিক ইয়াবা পাচারকারী ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। অথচ এরপরও কিছুতেই থামছে না ইয়াবা পাচার। পাশাপাশি এক শ্রেনীর অসাধু অর্থলোভী রোহিঙ্গা টাকার লোভে পড়ে ইয়াবাপাচার অব্যাহত রেখেছে।
তথ্য সুত্রে জানা যায়, চালান প্রতি একজন ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে নাফনদের ওপার থেকে এপারে পেটে করে ইয়াবা পাচার করে আসছিল তারা। আটকৃকৃত ১৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও এক্স’রের মাধ্যমে ১৩ জনের পেটে ইয়াবা রয়েছে সেই বিষয়টি শনাক্ত করা হয়েছে।
সহকারী পরিচালক আরও জানান, শনাক্ত হওয়া ১৩ রোহিঙ্গা শুক্রবার রাত ১১ টা পর্যন্ত পেট থেকে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়ছে।
তিনি আরো জানান তাদের পেটের ভিতর আরো ইয়াবা রয়েছে সেই ইয়াবা গুলো পর্যায় ক্রমে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। পাচারে জড়িত রোহিঙ্গারা স্বীকার করে বলেছেন তারা একবার ইয়াবা আনলে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা পায়।
এ ঘটনায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
You must be logged in to post a comment.