সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / প্রাকৃতিক ও পরিবেশ / পাথর শেষ, এখন কুড়ানো হচ্ছে নুড়ি কণা

পাথর শেষ, এখন কুড়ানো হচ্ছে নুড়ি কণা

লামার ডলুঝিরি হতে নুড়ি কনা নিয়ে যাচ্ছে পাথরখেকোরা।

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা উপজেলা অধিকাংশ নদী-খাল-ঝিরি-ছড়া-ঝরণা হতে পাথর আহরণ শেষ করে এখন নুড়ি কনা কুড়ানো হচ্ছে। নির্বিচারে পাথর উত্তোলনের কারণে নদী-খাল-ঝিরির দু’পাড়ের বিস্তৃর্ণ এলাকা ভেঙ্গে যাচ্ছে ও ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ডলুঝিরিতে (দুখিয়া পাহাড়ের পাদদেশে) বসবাসরত লোকজন জানিয়েছেন, কয়েকবছর যাবৎ পাথরখেকোরা ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝিরির সব পাথর নিয়ে গেছে। বর্তমানে ঝিরিতে কোন পাথর নেই। এখন তারা নুড়ি কনা গুলো পর্যন্ত কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিষেধ করলে তারা শুনেনা। ঝিরি দু’পাশের বিস্তৃর্ণ এলাকা ও চাষের জমি ভেঙ্গে গেছে। উদ্বেগের বিষয় হল, এইসব মাটি জাতীয় নুড়ি কনা পাথর গুলো ব্রিজ ও বহুতল সরকারি ভবন নির্মাণের কাজে ব্যবহার করছে।

নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, মাঝে মধ্যে প্রশাসনের সাময়িক পদক্ষেপ লক্ষ্য করা গেলেও স্থায়ীভাবে পাথর বন্ধে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। অবাধে পাথর সহ নুড়ি কনা নিয়ে যাওয়ার কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। যারা পাথর নিয়ে তারা প্রভাবশালী হওয়ায় গ্রামের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।

লামার ডলুঝিরি হতে নুড়ি কনা নিয়ে যাচ্ছে পাথরখেকোরা।

লামা উপজেলায় রাতের আধাঁরে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পাচারের জন্য বিভিন্ন স্থানে মজুদ করা হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষাধিক ঘনফুট অবৈধ পাথর। পাহাড়-খাল-নদী-ছড়া খুঁড়ে উত্তোলনকৃত এইসব অবৈধ পাথর থেকে কোন রাজস্ব পায়নি সরকার।

পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের কাছ থেকে জানা যায়, উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের বনপুর, ইয়াংছা, ছমুখাল, পাইকঝিরি, ওয়াক্রা পাড়া, খ্রিস্টান পাড়া, মরা ঝিরি, চচাই পাড়া, কেরানী ঝিরি, কইতরের ঝিরি, বুদুম ঝিরি, চিনির ঝিরি, গয়ালমারা, বালস্ট কারবারী পাড়া ঝিরি, জোয়াকি পাড়া, বাকঁখালী ঝিরি, হরিণ ঝিরি, রবাট কারবারী পাড়া ঝিরি, বালুর ঝিরি, আলিক্ষ্যং ঝিরি, কাঁঠালছড়া, বদুর ঝিরি, গজালিয়া ইউনিয়নের ব্রিকফিল্ড, মিনঝিরি, ফাইতং রাস্তার মাথা, আকিরাম পাড়া, নাজিরাম পাড়া, ফাইতং ইউনিয়নের মিজঝিরি অংশ, লম্বাশিয়া, মেহুন্ধা খাল, শিবাতলী পাড়া এবং সরই ইউনিয়নের লুলাইং, লেমুপালং এ কয়েক হাজার স্তুপে ৩ লক্ষাধিক অবৈধ পাথর জমা করা হয়েছে। যা হতে প্রতিরাতে চুরি করে পাচারও হচ্ছে। পাথর উত্তোলন, পাচার করতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা পানির উৎস নদী, খাল, ছড়া গুলো ধ্বংস করছে অপরদিকে ভারি ট্রাকে করে পরিবরণ করতে গিয়ে গ্রামীণ রাস্তাঘাট সমুহ ভেঙ্গে নষ্ট করছে। এতে করে অত্র অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।

এইসব অবৈধ পাথরের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারি পরিচালক সাইফুল আশ্রাব বলেন, বর্তমানে পাথরের কোন পারমিট দেয়া হয়নি। মজুদকৃত পাথরের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি বছরে লামা উপজেলায় কোন পাথরের পারমিট দেয়া হয়নি। অবৈধ পাথর ব্যবসায়ী ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/05/Election-Sagar-16-5-24.jpeg

ঈদগাঁওতে প্রজাপতি প্রতীকের মেহেনূর আক্তার পাখির প্রচারণা চলমান

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও : কক্সবাজারের নবসৃষ্ট ঈদগাঁও উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে মহিলা ভাইস ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/