এস.এম.ছগির আহমদ আজগরী; পেকুয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে মূল্যবান খনিজ সম্পদ বালি উত্তোলন আহরণ পাঁচার বানিজ্যে মেতেছে প্রভাবশালীরা। এতে সরকার শুধু বিপুল পরিমান রাজস্ব বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিমত পরিবেশবাদীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৭ ইউনিয়নের পেকুয়া উপজেলায় ৩-৩টি ইউনিয়ন যথাক্রমে টইটং, বারবাকিয়া ও শিলখালী ইউনিয়নে রয়েছে বিস্তির্ণ বনাঞ্চল। চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের অধিন বারবাকিয়া রেঞ্জভুক্ত হিসাবে পরিচিত ৩ইউনিয়নের সংরক্ষিত বনবিভাগের সহায় সম্পদের দেখভালোয় রয়েছে টইটং, বারবাকিয়া ও পাহাড়চাদা নামের ৩টি বনবিট।
শনিবার টইটং ও বারবাকিয়া বনবিট এলাকা সরোজমিন ঘুরে দেখা গেছে যে, ওই এলাকার সংগ্রামেরজুম, আরগিল্লারদারা ও তৎসংলগ্নে সংরক্ষিত বনবিভাগের ছড়াগুলোয় পৃথক পৃথক সিন্ডিকেটের লোকজন বালি উত্তোলনের একাধিক ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে মূল্যবান পাহাড়ী খনিজ সম্পদ উত্তোলন আহরণ পাঁচার বাণিজ্যে মেতেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা এঘটনায় জড়িতদের নাম জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, বালিদূস্যতায় জড়িতদের নাম প্রকাশের ঘটনা টের পেলে অভিযুক্তরা তাদের শুধু নানা ভাবে শোষণ হয়রানীই নয় প্রয়োজনে খুন গুমও করতে পারে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পৃথক ৪/৫টি সিন্ডিকেটে বালি উত্তোলনের অবৈধ ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে মূল্যবান এ খনিজ সম্পদ আহরণ পাঁচার বানিজ্যে মাতলেও নাম পাওয়া গেছে ২টি চক্রের। এরা হলেন যথাক্রমে টইটং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ধনিয়াকাটা পূর্ব আবদুল্লাহপাড়া এলাকার মৃত আজিজুর রহমানের পুত্র মোঃ আবদুল জব্বার প্রকাশ সন্নাসী জব্বার। আর তার সাথে রয়েছে একই এলাকার মোঃ কালুর পুত্র মোহাম্মদ রফিক। এছাড়া পৃথক আরেকটি ক্ষমতাধর সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়ীয়াখালী এলাকার জাফরের পুত্র বর্তমান মেম্বার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ বনরাজা জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই মোঃ আলমগীর প্রকাশ ডাকাত আলমগীর। বনবিভাগের সংরক্ষিত রিজার্ভ পাহাড়ী লোকালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিত বালি উত্তোলন আহরণ পাঁচার বানিজ্যের কারণে সেখানকার পাহাড় টিলাগুলোয় দেখা দিয়েছে ছোট বড় বিপদজনক ফাটল।
এছাড়াও সেখানে উত্তোলিত বালি পাঁচারে পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করায় বন জীব বৈচিত্র রক্ষার পরিবেশও পড়েছে হুমকির মুখে। বনবিভাগের সংরক্ষিত রিজার্ভ পাহাড়ি লোকালয়ে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিত বালি উত্তোলনের ফলে সেখানকার বন পরিবেশে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের বিপর্যয়।
এ প্রসঙ্গে, বনবিভাগের লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা নিজেদের ঢাল তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দ্দার উল্লেখ করে বলেন, পর্যাপ্ত অস্ত্র ও জনবল সংকট ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের সার্বক্ষণিক সহযোগিতার অভাবে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু ছাড়া তাদের পক্ষে অপরাধীদের ধরে বিচারাদালতে সোপর্দ সম্ভব হয় না বলে দিন দিন তারা বেপরোয়া হয়ে পড়ছে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহাবুব উল হকের কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি কেউ তাকে অবহিত করেনি মন্তব্য করে বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বালি দস্যুতা বন্ধে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা চাইলে প্রয়োজনে তিনি স্বশরীরে পরিদর্শনে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
You must be logged in to post a comment.