গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমার জলদস্যুদের লাগাতার তান্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বাংলাদেশী জেলেরা। ইদানিং এই জলদস্যুরা বাংলাদেশী ট্রলারকে লক্ষ্য করে জেলেদের উপর চালাচ্ছে অতর্কিত গুলিবর্ষণ, লুট করে নিয়ে যাচ্ছে সাগরে পাওয়া মাছসহ ট্রলারে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র। এতে টেকনাফ উপকূলীয় জেলে পরিবারে চলছে আতংক ও হতাশা। এই ঘৃণ্য ঘটনাটি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের আটক করতে কঠোর ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী। অবশেষে গত ২২ মার্চ বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী সদস্যরা সেন্টমার্টিনের অদুরে বঙ্গোপসাগরে অভিযান চালিয়ে ১০ জন জলদস্যুকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। আটককৃতরা সকলেই মিয়ানমার নাগরিক।
এ ব্যাপারে বানৌজা আবু বকর জাহাজের পেটি অফিসার মোঃ ইমরান আহমদ জানান, গত ২২ মার্চ বুধবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে সেন্টমার্টিনের অদুরে বঙ্গোপসাগরে পূর্ব-দক্ষিন সীমানায় মিয়ানমারের জলদস্যুরা বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে ডাকাতির উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে। এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর বানৌজা আবু বকর জাহাজের মাধ্যমে টহলদল নিয়ে উক্ত স্থানে পৌঁছে। এরপর নৌবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের জলদস্যুরা পালানোর চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া করে আটক করা হয়। এসময় তাদের ব্যবহ্নত একটি ট্রলার জব্দ করা হয়। ওই ট্রলারে তল্লাশী চালিয়ে ৩টি লম্বা তলোয়ার ও ২টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো জানান, আটককৃৃতদের কাছে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের বিষয়ে বৈধ কোন কাগজ পত্র পাওয়া যায়নি।
এদিকে আটককৃতদের টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে পৃথক ২টি মামলা রুজু করা হয়েছে। জব্দকৃত ট্রলারটি টেকনাফ শুল্ক গুদামে জমা করা হয়েছে। আটককৃতরা হচ্ছে মিয়ানমারের শাহপুর জেলার লিদে থানার সেন জ্য এর পুত্র মতি মি (৩৩), সাইটো গ্রামের অং প ইউ এর পুত্র থশম (৩৬), লেটুয়া জেলার মুনসিসিকা থানার উটচি এর পুত্র ডেলবা (৩৪), সুচিং লার পুত্র বাসু বে (৪০), সাটু গ্রামের সটেং প্রুর পুত্র চ্য চ্য (৩৭), থাপস গ্রামের মইয়ার পুত্র থা মিয়্যে (৩২), খাপা সাং গ্রামের খাবিসির পুত্র চ উস্যে (৩০), উটসের পুত্র চু চ্যে প্রু (৩৮), মং সুয়া (৩৫) ও শাহপুর গ্রামের উ চ্যলার পুত্র উট কি ওক্যে (৩৩)।
উল্লেখ্য যে, গত কয়েকদিন যাবৎ বঙ্গোপসাগরে বেশ কয়েকটি বাংলাদেশী ফিশিং ট্রলারে ডাকাতি সংঘটিত হয়ে আসছে। এই সমস্ত ঘটনায় বাংলাদেশী কয়েকজন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। জেলেদের কাছ ছিনিয়ে নিয়ে যায় নগদ টাকা, মাছ লুটসহ মূল্যবান জিনিস পত্র। মিয়ানমারের জলদস্যুরা এর আগেও বাংলাদেশী জেলেদেরকে ব্যাপক মারধর করে নৌকা ডুবিয়ে দিয়ে সাগরে পেলে দেয়।
You must be logged in to post a comment.