সাম্প্রতিক....
Home / জাতীয় / বাঙালির ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

বাঙালির ঐতিহাসিক ৭ মার্চ


আজ মঙ্গলবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর ভাষণের দিনটি ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে।

১৯৭১ সালের এইদিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভায় লাখো মানুষের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতাযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তখন বলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ যা শুনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো বাঙালি জাতি।

তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার নির্দেশের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটায়। স্বাধীনতার যে ডাক তিনি দিয়েছিলেন, তা বিদ্যুৎ-গতিতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।

সেদিন বেলা ৩টা ২০ মিনিটে রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত হন লাখো জনতার সেই মহানায়ক। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ওইদিন (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। গগন কাঁপানো স্লোগান ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’ ছিল পুরো ময়দানজুড়ে। জনসমুদ্রে উপস্থিত জনতাকে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।’

১৯৭০ সালের আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক শাসকগোষ্ঠী বিজয়ী আওয়ামী লীগ তথা বাঙালিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে।

প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য ছিল- যেকোনোভাবে পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে ১ মার্চ এ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মূলতবি ঘোষণা করা হয়।

প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২ ও ৩ মার্চ সারাদেশে হরতাল পালন করে। এই পটভূমিতে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতায় তার বলিষ্ঠ কণ্ঠে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।

৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর দরাজকণ্ঠে ১৯ মিনিটের সেই ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে দারুণ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। আজও অনেকের কাছে সেই ভাষণ অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে।

রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়া দিনটি উপলক্ষে টেলিভিশন ও রেডিওতে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে। সংবাদপত্রগুলোতে বের করা হবে বিশেষ ক্রোড়পত্র।

আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দেশের প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, থানা, উপজেলা, মহানগর ও জেলাসমূহের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে সম্প্রচার করা হবে।

দিনটি উপলক্ষে প্রতিবার আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা বা জনসভার আয়োজন করা হলেও এবার এ ধরনের কোনো কর্মসূচি নেই। এবারের ৭ মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি ইন্ডিয়ান ওসান রিম  অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনদিনের সফরে ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থান করছেন। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি:
ভোর সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায়, বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ৮টায় দেশের সব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, থানা, উপজেলা, মহানগর ও জেলাসমূহের প্রতি পাড়া-মহল্লায় ৭ মার্চের ভাষণ প্রচারের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে সভা-সমাবেশের আয়োজন।

সূত্র:priyo.com,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

লামায় জমি নিয়ে বিরোধে জের ধরে ১ জনকে কুপিয়ে খুন, আহত ৭

  মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বান্দরবানের লামা উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষের ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/