নির্বাচনকে ঘিরে হত্যা, জখম, ভোটকেন্দ্র দখল, জালভোট প্রদান ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের সেই পুরনো রক্তাক্ত ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
২৯ মার্চ, বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এই মন্তব্য করেন।
বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া এই বক্তব্যের সমালোচনায় রুহুল কবির বলেন, ‘লুটপাটের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বৈরাচারী সরকারের দ্বারা নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হলে তা হবে একদিকে যেমন অবৈধ, তেমনি অন্যদিকে তাদের দ্বারা কখনোই সুষ্ঠু, অবাধ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। তাই জনগণ বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের খায়েশ পূরণ হতে দেবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনগুলোতে পূর্বের মতোই আওয়ামী চেতনার সন্ত্রাস অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে হত্যা, জখম, ভোটকেন্দ্র দখল, জালভোট প্রদান ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের আগের সেই পুরনো রক্তাক্ত ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
ইতোমধ্যে টাঙ্গাইলের কয়েকটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলাধীন নাজিরহাট পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সারোয়ার আলমগীরের বাড়িতে হামলা এবং আহমদিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবকিছু জেনেও নির্বাচন কমিশনের নিশ্চল, নির্বিকার ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
টাঙ্গাইলে ভোট নিয়ে রিজভী বলেন, ‘টাঙ্গাইল জেলাধীন ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগের রাতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সাগরদিঘীর সোনামুড়ি গুপ্ত বৃন্দাবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে সিল মারার সময় ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি আবদুল মালেক প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে তাকে গুলি করে হত্যা করে।
আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত কাপুরুষোচিত এই পৈশাচিক ঘটনার বিরুদ্ধে আমি দলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। একই সাথে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত আবদুল মালেকের জন্যও আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি, তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি সবসময় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য কথা বলে যাচ্ছে যে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। বর্তমান সংসদ ভেঙে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এ ছাড়াও সময়, সুযোগ মতো বিএনপি নিশ্চয়ই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবে।’
সরকারি খরচে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণ ও বিধি উপেক্ষা করেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নিজেকে এই দেশের জমিদার মনে করেন। ফলে সকল ধরনের জনমত উপেক্ষা করে তিনি নির্বাচনী প্রচারণাও চালাচ্ছেন। কারণ তিনি এতই ক্ষমতাধর এতই তার ক্ষমতা তাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো এখন কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নেই।’
সূত্র:মোক্তাদির হোসেন প্রান্তিক-priyo.com;ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.