কক্সবাজারের পেকুয়ায় ‘সাইক্লোন-কোমেন অপারেশন ২০১৫’ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ সহায়তায় ব্যাপক অনিয়ম, জালিয়তি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সংগৃহিত তালিকায় ক্ষতিগ্রস্ত ২০০জনের মধ্যে ৩৯ জন উপকারভোগীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ছবি পাল্টিয়ে প্রথম কিস্তিতে তিন হাজার টাকা করে ১লাখ ১৭ হাজার টাকা ও দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬হাজার করে ৩২জন উপকারভোগীর ১লাখ ৯২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও জালিয়তি ফাঁস হওয়ায় এ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারেনি প্রতারক চক্র। উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্থানীয় অফিস সুত্র জানায়, ‘সাইক্লোন-কোমেন অপারেশন ২০১৫’ প্রকল্পের আওতায় পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত ২০০ জনকে দুই কিস্তিতে নয় হাজার টাকা অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তের তালিকাটি চুড়ান্ত করা হয়। স্বচ্ছতার জন্য প্রত্যেক উপকারভোগীকে চেক দিয়ে জনতা ব্যাংক, পেকুয়া শাখার মাধ্যমে এই অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়।
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, একটি প্রতারক চক্র তালিকাভুক্ত ২০০ উপকারভোগীর মধ্যে ৩৯ জনের নাম, বাবার নাম, মাতার নাম, জাতীয়পরিচয়পত্র নম্বর, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে শুধুমাত্র ছবি পাল্টিয়ে এক মাস পূর্বে দেয়া প্রথম কিস্তির তিন হাজার টাকা করে ১লাখ ১৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
১৮ অক্টোবর উপকারভোগীদের চেকের মাধ্যমে দেয়া হয় দ্বিতীয় কিস্তির ৬হাজার টাকা। ওইদিন জালিয়ত চক্রের ফাঁদে পড়া ৩৯ জনের মধ্যে ৩২ জনের ১লাখ ৯২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অপর ৭জন নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ যোগাযোগ করে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ধরলে তারা ৬হাজার টাকার চেক পান প্রতিজনে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহকারি পরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, দ্রæততার সাথে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাটি তৈরী করা হয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের সহায়তায়। কিন্তু ওই তালিকা যারা দিয়েছে, সেখানেই অনিয়ম হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ছবি পাল্টিয়ে টাকা আত্মসাত্ যারা করেছে তাদের সনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে প্রথম কিস্তির টাকা না পাওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
জালিয়ত চক্রের কারনে প্রথম কিস্তির টাকা না পাওয়া ৩৯ জনের মধ্যে নাজমা সোলতানা, আবুল কাশেম, জকির আলম, আবদুস শুক্কুর, জাহান আরা বেগম, আছত আলী ও মোহাম্মদ আলম গতকাল পেকুয়া জনতা ব্যাংক কার্যালয়ের বাইরে বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান জালিয়তি করে আমাদের ছবি পাল্টিয়ে অন্যদের ছবি লাগিয়ে দিয়ে প্রথম কিস্তির টাকা তুলে নেয়া জালিয়ত চক্রের বিচার ও না পাওয়া টাকা আমাদের দিতে হবে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জালিয়তির ঘটনায় আমি কোনভাবেই জড়িত নই। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চুড়ান্ত তালিকা করেছে ওই সংস্থার কর্মকর্তারাই। ওই তালিকায় আমার স্বাক্ষর নেই। ছবির ব্যক্তি আসল না নকল আমার কাছ থেকে সত্যায়ন করা হয়নি। পরিচয়পত্র জালিয়তি কারা করেছে, সংস্থাটির লোকজনই ভালো বলতে পারবেন।
You must be logged in to post a comment.