সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / লামার ফাঁসিয়াখালীর বগাইছড়ি, কমিউনিটি সেন্টার ও মালুম্যার বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছেনা

লামার ফাঁসিয়াখালীর বগাইছড়ি, কমিউনিটি সেন্টার ও মালুম্যার বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছেনা

লামা উপজেলা ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি, মালুম্যা ও কমিউনিটি সেন্টার এলাকা হতে বালু তোলা চিত্র।

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :

বান্দরবানের লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি, উত্তর মালুম্যা ও কমিউনিটি সেন্টারের ১৫টির অধিক স্থান থেকে কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে সেলু মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে কিছু প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এতে করে খালের দুই পাড়, বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালর্ভাট ও মানুষের বসতবাড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে এই বালু সন্ত্রাসকে। কার্যকরী ও কঠোর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় কোন ভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে বালু সন্ত্রাসকে, এমনটাই জানান স্থানীয়রা।

অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়ে বলে জানিয়েছেন, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি। তিনি আরো বলেন, লামা উপজেলার কোথাও কোন বালু মহাল নেই এবং সরকারীভাবে বালু উত্তোলনের ইজারা দেয়া হয়নি। বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ বেআইনী। অসংখ্যবার আমরা অভিযান চালিয়েছি। বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকরী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি, উত্তর মালুম্যা, কমিউনিটি সেন্টার, ফাঁসিয়াখালী ছড়া, কুমারী এলাকায় হতে কমপক্ষে ৩০টি সেলু মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মানুষ, সরকারদলীয় লোকজন ও পার্শ্ববর্তী ডুলহাজারা-চকরিয়ার লোকজন এই বালু সন্ত্রাসের সাথে জড়িত। বগাইছড়ি এলাকার অনেকে জানিয়েছেন, বালু তোলার কারণে তাদের ফসলের জমি, বসতবাড়ি ও খালের দু’পাড় ভেঙ্গে যচ্ছে। তারা কাউকে বলে কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষমতাবান হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।

উত্তর মালুম্যার লোকজন জানান, শুধুমাত্র মালুম্যা এলাকায় ১৫টির অধিক সেলু মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু তোলা হয়। এতে করে খালের দু’পাড় ভেঙ্গে নষ্ট হচ্ছে বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, পাহাড় ও বসতবাড়ি। আতংকের বিষয় হচ্ছে তারা ফসলের জমিতে গর্ত করে পানি দিয়ে বালু তুলছে। এইভাবে হতে থাকলে কয়েকবছর পরে কোন ফসলের জমি থাকবেনা। পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারা এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকজন এই পরিবেশ ধ্বংসের সাথে জড়িত।

নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কমিউনিটি সেনটারের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ব্যাপক বালু তোলার কারণে বড়ছনখোলা ও বগাইছড়ি ব্রিজ দুইটি হেলে পড়েছে।

আরো কয়েকটি ব্রিজ, কালভার্ট ও রাস্তাঘাট বিলীনের পথে। প্রতিবছর জানুয়ারী থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত স্থানীয় ও বহিরাগত প্রভাবশালী সিন্ডিকেট সেলু ইঞ্জিন দিয়ে নদী, খাল ও ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে থাকেন। প্রতিদিন গড়ে ৫০ থকে ৭০ ট্রাক বালু উত্তোলন করে নিয়ে যায়।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি, কমিউনিটি সেন্টার ও উত্তর মালুম্যা হতে এরশাদুর রহমান, মো. শাহজাহান, সিরাজুল ইসলাম ও আলতাজ মিয়া বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত বলে জানায় স্থানীয়রা। এ বিষয়ে তারা বলেন, নিউজ করা দরকার নেই। সবাইকে ম্যানেজ করেই আমরা বালু নিয়ে যাচ্ছি। সরেজমিনে গিয়ে ফাঁসিয়াখালীর মালুম্যা ও বগাইছড়ি অংশের খালের মাঝে বালুর স্তুপ দেখা যায়। পুরো খাল জুড়ে রয়েছে বালুর স্তুপ।

ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। আমার জানা মতে লামা উপজেলার কোথাও বালু মহালের পারমিট নেই। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে প্রতিবছর ভাঙ্গছে খালের দু’পার। গত কয়েক বছরের বালু তোলার কারণে ২৫টি বসতবাড়ী সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। আরো ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে খালপাড়ের ৫০ থেকে ৭০টি বসতভিটা সহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও বৌদ্ধ মন্দির।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/05/Khorshida-Jannat-Sagar-14-5-224.jpeg

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফাহমিদা বেগমের সাথে ঈদগাহ হাই স্কুল প্রধান শিক্ষকের সাক্ষাৎ 

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, কক্সবাজারের উপ-পরিচালক ফাহমিদা বেগমের সাথে ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহ ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/