মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
বান্দরবানের লামায় এক্সিম এগ্রো কোম্পানি লিঃ এর সৃজিত ১৮ বছরের রাবার ও একাশি বাগান জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এর বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে এক্সিম এগ্রো কোম্পানি লিঃ এর ম্যানাজার মোঃ ইলিয়াছ আলী চৌধুরী বাদী হয়ে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শহীদ আল বোখারী সহ ১০ জনকে আসামী ও ৭০/৮০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবি এডভোকেট মোঃ ইব্রাহিম বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার মামলাটি আদালতে উপস্থাপন করা হলে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি তদন্ত করতে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দায়িত্ব প্রদান করেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে আদালত।
মামলার আসামীরা হলেন, শহীদ আল বোখারী (৭৫) চেয়ারম্যান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, মোঃ আতাউর রহমান (৪৮), মোঃ মাসুদ পারভেজ (৪০), সাজেদুর রহমান (৩৫), সুরুজ মিয়া (৪৮), মোঃ শহীদুল (৪৮), তরিকুল (৩৪), ইসমাইল (৩৫), রহিম (২৫) ও ইকবাল (২৬) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭০/৮০ জন।
অভিযোগ সূত্রে ও মামলার বাদী মোঃ ইলিয়াছ আলী চৌধুরীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সরই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও এক্সিম এগ্রো কোম্পানির মালিক মোঃ নুরুল আবছার এর নামে ৩০৩ নং ডলুছড়ি মৌজায় ৯টি হোল্ডিং মূলে ৪১.৪০ একর জায়গা সরকারি তৌজিতে রেকর্ডভুক্ত আছে। উক্ত জায়গায় ২০০২ সাল থেকে রাবার ও একাশি গাছের বাগান সহ ফলদ ও বনজ বাগান সৃজন করে এক্সিম গ্রুপ শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে রয়েছে। উল্লেখিত জায়গা কোয়ান্টামের পার্শ্ববর্তী ও যাতায়াতের সু-ব্যবস্থা থাকায় তাদের কু-নজর পড়ে।
উক্ত ৪১.৪০ একর জায়গার মধ্যে আর/১১২৩ হোল্ডিংয়ে ৫ একর, আর/৮১৩ হোল্ডিংয়ে ৪.৮০ একর, আর/৭৪০ হোল্ডিংয়ে ৪ একর সহ মোট ১৩.৮০ একর জায়গা গত ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ১০টায় জোরপূর্বক দখল করে কোয়ান্টাম। মামলার ১,২ ও ৩নং আসামীর নির্দেশে ৪নং হতে ১০নং আসামীর নেতৃত্বে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের নিজস্ব ও বহিরাগত অজ্ঞাতনামা আরো ৭০/৮০ জন অস্ত্রধারী ও লাঠিয়াল লোকজন বাগান দখল করে। তাদের হাতে দা, খন্তা, শাবাল, প্লাস, হেমার ও কোদাল ছিল। এসময় তারা হাকাবকা করে, ‘যে বাধা দিবে তাকে খুন করা হবে’। দখলদাররা বাগানের গাছ কেটে সেখানে কটেজ ও বসতবাড়ি নির্মাণ করে জায়গা দখলের পায়তারা করছে। ইতিমধ্যে কোয়ান্টাম আমাদের সৃজিত বাগানে কংক্রিটের পিলার ও কাটা তার দিয়ে ১৩.৮০ একর জায়গা ঘিরে ফেলে লোহার গেইট দিয়েছে। সেখানে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা।
সরেজমিনে ও মুঠোফোনে সরই ইউনিয়নের লম্বাখোলা এলাকার বাসিন্দা খলিল ও গিয়াস উদ্দিনের সাথে কথা হয়। তারা জানায়, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ৩০৩নং ডলুছড়ি, ৩০২নং লুলাইং ও ৩০০নং বড় বমু ৩টি মৌজায় কমপক্ষে ৫ হাজার একর পাহাড়ি জায়গা রয়েছে। সরই বাজারের নামার ত্রিপুরা পাড়া থেকে শুরু করে বমু খালের তলই পাড়া ও চাম্বাঝিরি পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুধু ডলুছড়ি মৌজায় কোয়ান্টামের জায়গা বিস্তৃত। দিনে দিনে তাদের জায়গার পরিমাণ বাড়ছে।
এবিষয়ে কথা হয় লামা উপজেলার সরই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অর্গানিয়ার এডভোকেট আরিফুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, যেদিন ঘটনা ঘটে তখন আমি এখানে ছিলাম না। ছুঁটিতে ছিলাম। জায়গা জমির বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়সাল আজিজ ভালো বলতে পারবেন। ফয়সাল আজিজ বলেন, এই জায়গা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন মোঃ আতাউর রহমান ও রহমান সাহেবের পরিবারের লোকজন থেকে ক্রয় করেছে। এবিষয়ে যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত সমাধান দিবেন। আমরা আমাদের জায়গায় ভোগদখলে আছি, কারো জায়গা দখল করিনি।
You must be logged in to post a comment.