মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের টিয়ারঝিরি এলাকায় শশুর বাড়ির লোকজন কর্তৃক শারীরিক, মানসিক ও পারিবারিক নির্যাতনে গৃহবধূ মঞ্জুরা বেগম আলপনাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করেছে তার পিতা তাজুল ইসলাম ও মাতা রওশন আরা বেগম। ঘটনাটি পরিকল্পিত খুন বলে ব্যাখ্যা দিয়ে রোববার (১০ জুন) লামা রিপোর্টার্স ক্লাব হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলন করে তার পরিবার।
এসময় নিহতের পিতা তাজুল ইসলাম লিখিত প্রেস রিলিজে বলেন, গত ২০০৮ইং সালে আমার মেয়েকে টিয়ারঝিরি এলাকার আব্দু রহমানের ছেলে মো. জাকির হোসেনের সাথে বিবাহ দিই। বর্তমানে সে দুই সন্তানের জননী। বিবাহের পর থেকে কখনও সুখের ছিলনা আমার মেয়ের দাম্পত্য জীবন। সর্বশেষ গত ৭ জুন বৃহস্পতিবার মেয়ের শশুড় বাড়ির লোকজন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়ে হত্যা করে।
তিনি আরো বলেন, আলপনার স্বামী মো. জাকির হোসেন ৫/৬ মাস আগে চট্টগ্রামে ২য় বিবাহ করে। সে তার নতুন স্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করে ও ১ম স্ত্রীর কোন দেখাশুনা করেনা। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসত এবং তার মাতা শেফালি বেগম, পিতা আব্দু রহমান, বড় ভাই মন্টু মিয়া, বোন নাজমা বেগম, ফাহিমা বেগম কে নিয়ে আলপনাকে অমানবিক শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করত। মেয়ের নির্যাতনের কথা শুনে গত সোমবার (৪ জুন) আলপনার মা আমার স্ত্রী রওশন আরা বেগম মেয়েকে দেখলে তার শশুর বাড়িতে গেলে বেয়াই বাড়ির লোকজন খারাপ ব্যবহার করে এবং মারতে চায়। বুধবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় আমার স্ত্রী চলে আসে। পরেরদিন বৃহস্পতিবার ( ৭জুন) সকালে মেয়ের পাশের বাড়ির লোকজন আমাদের ফোন করে জানায় আলপনা বিষপান করেছে। আমরা মেয়ের বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে লামা হাসপাতালে আসি। লামা হাসপাতালে আসলে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কক্সবাজার হাসপাতালে রেফার করে। কক্সবাজার নেয়ার পর হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। আমরা মনে করি মেয়ের শশুর বাড়ির লোকজন তাকে পরিকল্পিত ভাবে মেরে ফেলে বিষপানে মৃত্যু বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছে।
আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক বিচারের দাবী করছি এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী করছি। এছাড়া মেয়ের জামাই মো. জাকির হোসেন কয়েকবার যৌতুকের টাকার দাবী করে। আমরা আমাদের এলাকার লোকজন হতে হাওলাত করে দুইবারে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মেয়ের স্বামীকে দিই। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক আইনী সহায়তা সহ দোষীদের আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছি।
এই বিষয়ে লামা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কামাল উদ্দিন বলেন, আমি ঘটনাস্থলে তথা মেয়ের শুশুর বাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছি। মামলাটির তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে মূল কারণ জানা যাবে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। মেয়েটি ভাল ছিল। মূল কারণ বের করে দোষীদের শাস্তি দাবী করছি।
You must be logged in to post a comment.