অজিত কুমার দাশ হিমু; কক্সভিউ :
প্রকৃতিতে এখন শীতল হাওয়া বইছে। প্রকৃতির বুকে ডাকা পড়েছে কুয়াশার ছাদর। এতে কক্সবাজারের সর্বত্রই ভাপাপিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে। পাশাপাশি চলছে বিনি চালের ভাত বিক্রিও। কক্সবাজার অঞ্চলের গ্রাম-শহর, অলি-গলি সবখানেই চলছে ঐতিহ্যবাহী এই পিঠা তৈরী ও বেচা-কেনার উৎসব। এই পিঠার স্বাদে ক্রেতারা মন রাঙ্গালেও, এটিই এখন এখানকার নিম্ন আয়ের অনেক মানুষের উপার্জনের একমাত্র হাতিয়ার।
গরম গরম ভাপা পিঠা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে খেতে দেখা যায় স্কুল পড়ুয়া থেকে সকল বয়সের মানুষকে। প্রকৃতির ওই চিত্র দেখে মনে হয় চুলার পাশে বসে মায়ের হাতের পিঠে খাচ্ছে তারা। কুয়াশায় ঢাকা ভোরে এমন গরম গরম ভাপাপিঠা ও বিনি চালের ভাতের মজাই আলাদা।
একদিকে ভাপাপিঠার স্বাদ গ্রহণ, অন্যদিকে চুলার আগুন আর জলীয়বাষ্পের উত্তাপ যেনো চাঙ্গা করে দেয় দেহ মন। কক্সবাজারের সর্বত্রই এখন এই পিঠা ও বিনি ভাত তৈরি এবং বেচাকেনার ধুম পড়েছে।
শীতকালে এ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের অনেক মানুষই যুক্তহন এই পিঠা তৈরির সাথে। এ সময় এই পেশাই হয়ে ওঠে তাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন।
স্থানীয়ভাবে এই পিঠাকে বলা হয় ধু-পিঠা। ইতিহাসবিদদের মতে, এটি বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের পুরনো এক অনুষঙ্গ।
চালের গুড়া ও নারকেলের সাথে খেজুরের গুড় মিশিয়ে তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী এই ভাপা পিঠা। আকার ভেদে প্রতিটি পিঠা ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। আর বিনি চালের ভাত হচ্ছে আটালো তার উপর তিল ছড়িয়ে দিয়ে নারকেল ও খেজুরের গুড় মিশিয়ে খেতে হয় ভাত।
জানা যায়, এমন গরম গরম ভাপাপিঠা ও বিনি চালের ভাত বিক্রি কুয়াশায় ঢাকা ভোর থেকে শুরু হয়ে সকাল ১০টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে চলে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এর বিকিকিনি। মাঝে মধ্যে পিঠে খেতে এসে সিরিয়ালে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় পথচারীদের।
লালদীঘির পাড়ের এক পিঠা বিক্রেতা জাকির জানান, প্রতি বছরই সে পৌষের প্রথম থেকেই শীতের পিঠা বিক্রি করে তার সংসার চলে।
বর্তমানে খেজুরে গুরের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের সেই ভাপা পিঠার উৎসব যা কিনা প্রচলন ছিল গ্রামের প্রতি বাড়ি বাড়ি অতিথি আপ্যায়নের প্রধান খাদ্যে।
অজিত কুমার দাশ হিমু, কক্সবাজার, ২৩ নভেম্বর \ ০১৫৫৬৯৯৪২৭১
You must be logged in to post a comment.