দীপক শর্মা দীপু; কক্সভিউ :
কক্সবাজারের ৩ শতাধিক আবাসিক হোটেলকে স্যুয়ারেজ টিট্রমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) স্থাপনের নোটিশ দেয়া হলেও মাত্র ৭টি হোটেল তা বাস্তবায়ন করেছে। বাকি অন্য সব হোটেল তা বাস্তবায়ন করেনি। এসটিপি না থাকায় ভয়াবহ পবিবেশ দূষণের কবলের পড়েছে পর্যটন জোন।
পরিবেশ আইন না মেনে কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় গড়ে উঠেছে শত শত আবাসিক হোটেল, বহুতল ভবন, স্টুডিও এপার্টমেন্ট। পর্যটন শহরটি ইট কংক্রিটের শহরে পরিণত হয়েছে। এসব ভবনে যাতায়তের সুপরিসর কোন রাস্তা নেই। নেই নালা নদর্মা। পয়:নিস্কাষনের কোন ব্যবস্থা নেই। নেই কোন ডাষ্টবিন। ময়লা আবর্জনা স্তুপ হয়ে থাকে আশে পাশের এলাকা। দুর্গন্ধ থেকে রেহায় পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সরু রাস্তা দিয়ে অভাবনীয় দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে পথ চলতে হয় পথচারিদের। এটি গিঞ্জি শহরে পরিনত হয়েছে। এটি স্বাস্থ্যকর স্থান হলেও এখন অস্বাস্থ্যকর শহরে পরিণত হয়েছে।
প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকের অবস্থানের কারনে নানা চাপ বেড়ে যায়। পয়:নিস্কাষন ব্যবস্থা না থাকায় মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই অবস্থা থেকে উত্তোরনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর পয়: বর্জ্য পরিশোধনাগার তথা সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) স্থাপনের জন্য নোটিশ প্রদান করে। ৩ শতাধিক আবাসিক হোটেলকে নোটিশ দেয়া হলেও বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ৭টি হোটেল। অন্য বাকি সব হোটেল বাস্তবায়ন করেনি।
এসটিপি না থাকায় সব হোটেলের মল-মূত্র সরাসরি নালায়। খোলা জায়গায়ও ছাড়া হচ্ছে এসব মলমূত্র। এতে দুর্গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। পর্যটকদের নাকে মুখে হাত দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ভয়াবহ দুষনে পড়েছে পর্যটন জোন।
বছর আগে কলাতলি মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে নির্মিত নি:স্বর্গ হোটেলকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও মেসার্স ইমাজিন হোটেল (স্টুডিও এপার্টমেন্ট) নামক আবাসিক হোটেলকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে। দুইটি হোটেল কর্তৃপক্ষকে ৭ লাখ জরিমানা আদায় করা হয়। এবার এখনো যে সব এসটিপি স্থাপন করেনি পরিবেশ অধিদপ্তর এসব হোটেলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সাইফুল আশ্রাব বলেন-‘কক্সবাজারের পর্যটন জোন এলাকায় অবস্থানগত ছাড়পত্র না দিয়ে পূর্বে অসংখ্য বহুতল ভবন গড়ে উঠে। আর নতুন করে যারা স্থাপনা তৈরি করছে তারা ছাড়পত্র নেইনি। এ অবস্থায় সাড়ে প্রায় তিন শত আবাসিক হোটেলকে ছাড় পত্র নিতে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। ইনানীতে হোটেল রয়েল টিউলিপ ও কলাতলী মোড়ের হোটেল সায়মানসহ ৭ টি হোটেল এসটিপি স্থাপন করেছে। আরো ৮টি হোটেল আগামি ৩ মাসের মধ্যে এসটিপি স্থাপন করার সময় নিয়েছেন। এসটিপি স্থাপন না করায় অন্যান্য সব হোটেলের বিরুদ্ধে জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সেভ দ্য ন্যাচার এর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসাইন জানান, হোটেলে এসটিপি স্থাপন না করায় পর্যটন শহরের পরিবেশ দূষিত হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি দুর্গন্ধের শহরে পরিণত হবে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আজমল হুদা জানান- ‘পরিবেশ আইন না মেনে যেভাবে স্থাপনা তৈরি হচ্ছে, এতে বসবাস অনুপযোগী হয়ে উঠবে পুরো শহরটি। তাই বর্তমান পরিবেশ ছাড়পত্র না নিয়ে নির্মানাধিন ভবনগুলোর স্থাপনা নির্মান বন্ধ করে দেয়া প্রয়োজন। আর যারা আগে নির্মান করেছে তাদের স্থাপনা পরিবেশবান্ধব করতে পুন: সংস্কার করা জরুরি।’
You must be logged in to post a comment.