সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী পালিত : অকালে নিভে যাওয়া একটি উজ্জল নাম আলমগীর চৌধুরী হিরু

৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী পালিত : অকালে নিভে যাওয়া একটি উজ্জল নাম আলমগীর চৌধুরী হিরু

এম আবুহেনা সাগর, ঈদগাঁও :

সাংগঠনিক দক্ষতা, সুদক্ষ নেতৃত্ব, জনবান্ধব ব্যক্তিত্ব অকাল প্রয়াত আলমগীর চৌধুরী হিরু ছিলেন পুরো কক্সবাজারের মাটি ও মানুষের মনিকৌটার আরেকটি নাম। বঙ্গবন্ধুর আর্দশে বিশ্বাসী, বাঙ্গালী জাতিসত্ত্বা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্রোতধারা, মুক্তিকামী মানুষের অব্যক্ত বেদনা বুঝার অকৃত্রিম শক্তি, যা অপরিণত বয়স সত্ত্বেও তাকে দিয়েছে পরিপক্কতা।

পিতা মাষ্টার ছৈয়দুল আলম ছিলেন প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ। শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, ক্রীড়াবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে জেলার সর্বত্র তার নাম ডাক। মাষ্টার ছৈয়দুল আলম (আলম মাস্টার) অভিজাত ঘরানার পরিবারে রাশেদ উদ্দিন চৌধুরী বাবর, হুমায়ুন কবির চৌধুরী হুমু, হিরুর স্বকীয় চেতনার সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রকে প্রসারিতই শুধু করেননি, করেছেন নির্ভার – সমৃদ্ধও। সেই সময়ে বৃহত্তর ঈদগাঁওর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি কিংবা বঙ্গবন্ধুর চেতনাধারী কিংবা আওয়ামীলীগ বলতে এই আলম মাষ্টারের পরিবারই ছিল একমাত্র কেন্দ্রবিন্দু।

আলমগীর চৌধুরী হিরু ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের মুলধারার রাজনীতিতে দাপটের সাথে এদতাঞ্চলের গণমানুষের প্রতিটি আনন্দ বেদনার সারথী হয়ে তাদের অধিকার আদায়ে লড়াই করে গেছেন আমৃত্যু। শৈশব থেকেই তুখোড় মেধাবী ছাত্রনেতা আলমগীর চৌধুরী হিরুর জন্ম, বেড়ে উঠা,শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং আদর্শ পিতার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। শিক্ষা, শিল্পসংস্কৃতি চর্চার পারিবারিক আবহে মূল্যবোধ গঠন, সৃজনশীলতা ও মননশীলতা বিকাশে শিক্ষক পিতার পথনির্দেশনা কৈশোর সময়ে তাঁকে দিয়েছে একটি ব্যতিক্রমি নেতৃত্ব ও মানবহিতৈষী চেতনা। সেই দু:সময়ে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে এই অঞ্চলের ছাত্রসমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও স্থবিরতা ভেঙ্গে জ্বালিয়েছে শিক্ষা শান্তি প্রগতির আলো। সংগঠিত করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। জাগ্রত করেছেন জনগোষ্ঠিকে।

ছাত্র সংগঠনের সভাপতি থাকা অবস্থায় সে সময়ে  উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আদায় করেছে তুমুল জনপ্রিয়তা ও গণমানুষের অকুন্ঠ ভালবাসা। তাঁর অনলবর্ষী ও জাগানিয়া বক্তব্যে এ অঞ্চলের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছায়া খুঁজেছে, চরম মুগ্ধতায় উচ্ছ্বসিত হয়েছে, আবেগে ভালবাসায় আপ্লুত হয়েছে, নেতা পেয়েছি বলে তৃপ্ত হয়েছে। আবহমান বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও সেই মুহুর্তে আলমগীর চৌধুরী হিরুর বিচক্ষণ নেতৃত্বে বৃহত্তর ঈদগাঁওর আওয়ামীলীগসহ সহযোগী সংগঠন ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার যুবসমাজকে সংগঠিত করার মাধ্যমে রক্ষা করেছে বিভিন্ন এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ও তাদের ধন সম্পদ।

রাজনৈতিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে রাজপথের অগ্রভাগে অসম সাহস ও দৃঢ়তায় আলমগীর চৌধুরী হিরু ছিলেন নির্ভীক সৈনিক। হিরু সম্পর্কে তৎকালীন চটগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু তাহের চৌধুরীর মতে, আলমগীর চৌধুরী হিরু আমার অনুজ, তবে তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের যে গুণাবলী ছিল তা সমসাময়িক কোন নেতার মধ্যে ছিল না। মানুষ হিসেবে তাঁর মহত্ত্ব সর্বজনবিদিত। ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর দুর্দিনের এই কান্ডারী সবাইকে শোকে মুহ্যমান করে চলে গেলেন পরপারে। যারা দলের জন্য দেশের জন্য জীবনের সর্বস্ববাজী রেখে অকাতরে বিলীন হয়ে গেছেন। তাদের কবরে কী একটি ফুল বা দোয়াও জোটে না। অখ্যাত কত নেতার নামে শোকসভা, স্মরণসভা হয়, মিলাদ হয় দলীয় উদ্যোগে। আলমগীর চৌধুরী হিরুর নামে আজ পর্যন্ত বিবৃতি ও দেয়নি সে প্রিয় সংগঠন। তিনি কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগে সভাপতি ছিলেন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিপুল ভোটে ও জনপ্রিয়তায় কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

আজকের এই দিনে মনে পড়ে আলমগীর চৌধুরী হিরুকে। মহান ব্যক্তির মৃত্যুবাষিকীতে গভীর ভাবে শোকাহত তাঁরই প্রিয় এলাকাবাসী। মহান রাব্বুল আলামিন যেন পরপারে তাকে শান্তিতে রাখে।

এদিকে ১১ নভেম্বর ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকীতে ঈদগাঁও ইউনিয়নের মাইজ পাড়াস্থ মরহুমের নিজ বাড়ীতে সকালে মিলাদ মাহফিল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইরফানুল করিমের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা অকাল প্রয়াত সাবেক ছাত্রনেতা আলমগীর চৌধুরী হিরুর কবরস্থানে দোয়া কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর সংবাদকর্মী আবু হেনা সাগরের মাতা অসুস্থ : দোয়া কামনা 

  বার্তা পরিবেশক : কক্সবাজারে ঈদগাঁও উপজেলার সংবাদকর্মী এম আবুহেনা সাগরের মাতা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের ইবনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/