মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া:
আর মাত্র ১০ দিন পরেই দেবী দূর্গার বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দূর্গাপূজা। এ উপলক্ষ্যে কক্সবাজার জেলার প্রতিটি পূজা মন্ডপে চলছে শেষ মুহুর্তে প্রতিমাতে রংয়ের তুলি বসানোর কাজ। আগামী ১৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দূর্গোৎসব। আর দূর্গাপুজাকে নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনা। প্রতিটি পূজা মন্ডপে শুরু হয়েছে সাজসজ্জা। দূর্গোৎসব যাতে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা ।
পুঁজারী রাজু চক্রবর্তী জানান, পূজার প্রথমদিন থেকে ঢাকের শব্দ, বাঁশির শুরের মূর্ছনায় এবং উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠবে প্রতিটি পুজা মন্ডপ। এই জন্য মন্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে একদম নতুন সাঁজে। দূর্গাপুজা উপলক্ষ্যে প্রতিটি হিন্দু পরিবারের সদস্যদের মাঝে নতুন জামা-কাপড় কেনার ধুম পড়েছে। একে অপরকে নতুন জামা উপহারও দেয়া হচ্ছে। ফলে মার্কেটগুলোতে দেখা দিয়েছে প্রচন্ড ভিড়। যারা দরিদ্র শ্রেণীর রয়েছে তারাও পুজা শুরুর মুহুর্তে মার্কেটে ভিড় করবে পুজা উপলক্ষ্যে নতুন জামা-কাপড় কিনতে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, জেলার ৮টি উপজেলা এবং ৪টি পৌরসভায় এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে ২৭৬টি মন্ডপে। গতবারে ছিলো ২৬০টি মন্ডপ। এবারের মন্ডপগুলোর মধ্যে ১২৮টি প্রতিমা পুজা এবং ১৪৮টি ঘট পূজা হচ্ছে। তিনি জানান, জেলার ৮টি উপজেলার মধ্যে চকরিয়ায় ৪১টি প্রতিমা পূজা ও ৩৫টি ঘট পূজা, পেকুয়ায় ৬টি প্রতিমা পূজা ও ৬টি ঘট পূজা, কুতুবদিয়ায় ১২টি প্রতিমা পূজা ও ২৭টি ঘট পূজা, টেকনাফে ৫টি প্রতিমা পূজা, মহেশখালীতে ১টি প্রতিমা পূজা ও ৩১টি ঘট পূজা, রামুতে ১৮টি প্রতিমা পূজা ও ৯টি ঘট পূজা, উখিয়ায় ৫টি প্রতিমা পূজা ও ৮টি ঘট পূজা এবং কক্সবাজার সদরে ৪০টি প্রতিমা পূজা ও ৩২টি ঘট পূজা অুনষ্ঠিত হবে।
তিনি আরো বলেন, দূর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে ২৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বরাদ্দের ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে অল্প দিনের মধ্যেই বরাদ্দের বিষয়টি জানা যাবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে দূর্গাপূজা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে দূর্গাপূজা উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন ও পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথের নেতৃত্বে সব থানার ওসিদের নিয়ে এবং পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো: মাসুদ আলম।
এএসপি মো: মাসুদ আলম আরো বলেন, বাংলাদেশ বরাবরই অসম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এই দেশের মানুষ প্রতিটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান অসম্প্রদায়িক ভাবে পালন করে আসছে। আর এই দূর্গোৎসব যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনস্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হচ্ছে। প্রত্যেক পূজা মন্ডপে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রাখা হবে। পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের একাধিক টিম মোবাইল ডিউটি করবে বিসর্জন শেষ না হওয়া পর্যন্ত।
You must be logged in to post a comment.